বিএনপি’র তথকথিত পদযাত্রা, পদযাত্রা নয়, এই যেন শোক যাত্রা: লিটন


নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি’র দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অপরাজনীতি, চক্রান্ত ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে আজ শনিবার বিকেল ৩টায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য বেগম আখতার জাহান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল এঁর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রারম্ভে জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আজকে প্রত্যক্ষ করলাম বিএনপি’র নেতা মন্তব্য করেছেন যে, যেদিন যেদিন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করবে, আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হলে আমরা সেদিন আর কোন কর্মসূচী রাখবো না। যে নেতা এ কথা বলেছে আমি তাকে বলতে চাই, কেন রাজপথে আওয়ামী লীগ থাকলে আপনাদের অসুবিধাটা কি? আওয়ামী লীগ রাজপথে না থাকলে জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে আপনাদের সুবিধা হয়! চোরাগুপ্তা হামলা করতে সুবিধা হয়! ভাঙ্গচুর করতে সুবিধা হয়! অগ্নিসংযোগ করতে সুবিধা হয়! যা আপনারা করেছিলেন ২০১৪/১৫ সালে, জনগণ যা প্রত্যক্ষ করেছিলো। কিন্তু সেটি তো আর হবে না, কোনদিনই সম্ভব নয়। আজকে আপনারা পদযাত্রা করছেন, এর আগে আপনারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশের নামে পিকনিক করলেন। আপনারা ঢাকার সমাবেশ থেকে বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে বিএনপি’র কথায়, কই সে কথা? কোথায় গেলো সেই কথা? এখনও তো বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাই দেশ চালাচ্ছেন। তাহলে কি বিএনপি, আপনাদের কি এখনও ঘুম ভাঙ্গে নি?

বিএনপি’র পদযাত্রার প্রসঙ্গে জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এটা তো পদযাত্রা নয়, এই যেন শোক যাত্রা। এটা লাশ নিয়ে যাত্রা, বিএনপি’র ঘাড়ে যে লাশ আছে, সে লাশ নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে বিএনপি টেনে বেড়াচ্ছে। এই কথাকথিত পদযাত্রা দিয়ে আর যাই হোক শেখ হাসিনা’র সরকারের পতন ঘটানো কোনদিনই সম্ভব নয়। এর চেয়ের আরো বড় ঘটনা মেজর জিয়া ঘটিয়েছিলো, এরশাদ ঘটিয়েছিলো, খালেদা জিয়াও ঘটিয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যায় নি, আওয়ামী লীগ এগিয়ে গেছে। এত নির্যাতন, নীপিড়ন, সায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইয়ের সৃষ্টি করা, মানুষকে হত্যা করে মাথা নিচে পাঁ উপড়ে তুলে ঝুলিয়ে রাখা, অসংখ্য মা-বোনদের ধর্ষণ করা, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করা। এসব কাজ অনেক করেছে বিএনপি। বিএনপি এখন যদি পদযাত্রা করে মনে করছে যে, দেশবাসী মনে করবে বিএনপি ভালো হয়ে গেছে, ভদ্র হয়ে গেছে, আগামী নির্বাচনে ভোটের বাক্সে ধানের শীষে ভোট দিবে, যদি এমনটি ভাবে বিএনপি, তাহলে বিএনপি মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।

তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তার সম্পর্কে বলার মতো মানসিকতা আমার নেই, তারপরেও বলতে চাই, ০৮ হাজার মাইল দূরে লন্ডনে বসে থেকে কলকাঠি নাড়িয়ে আর যাই হোক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয় দেখানো যাবে না, ঘরেও ঢোকানো যাবে না। রাজনীতি করার যখন এতই শখ, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যখন এতই লালায়িত, তাহলে আসুন না দেশে, আপনি দাসখত লিখে মুচলেকা দিয়ে আর রাজনীতি করবেন না বলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে আপনি ও আপনার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে, আপনাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আদালত প্রক্রিয়া করছে, বাংলার মাটিতে কিভাবে এদের বিচার করতে হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা খুব ভালোমতোই জানেন। জাতির পিতার হত্যাকারী, একাত্তরের হত্যাকারী, রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আর আপনি তো কোন তারেক জিয়া। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই বাংলাদেশের মানুষ, আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, আমরা যারা দেশের প্রকৃত ভালো চাই, আমরা যারা আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্তের মূল্য দিয়ে দেশবাসীকে দুইবেলা নয় তিনবেলা খাওয়ানোর চেষ্টা করি, সেই আওয়ামী লীগকে এত হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি নাকি মে-জুন মাসে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবে, অতদিন লাগবে না, নির্বাচনের প্রস্তুতির মাধ্যমে তাদের সমুচিত দাঁতভাঙ্গা জবাব আওয়ামী লীগ দিবে। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে, দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ভয় দেখিয়ে, কোন লাভ নাই। তিনি রক্তে মাংসে গড়া মানুষ মনে হলেও তাঁর শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইস্পাতের মতো দৃঢ়। যে ইস্পাতকে ধ্বংস করা যায় না, তাঁকে ১৯ বার হত্যা চেষ্টা করেছেন, মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তাঁকে হত্যা সম্ভব হয় নি। দেশ গড়তে ও বাংলার মানুষের উন্নয়নের আরো কাজ বাকি আছে, সৃষ্টিকর্তা তাঁকে দিয়ে সে সকল কাজ করাবেন বলেই তিনি বার বার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন।

তিনি তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরি কিসেঞ্জারের বাংলাদেশ তলা বিহীন ঝুড়ি মন্তব্যের প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ এখন ফুলে ফলে পরিপূর্ণ একটি জাতিতে পরিনত হয়েছে, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে পরিপূর্ণ, আমরা রপ্তানি করতে পারি, আমরা দেশের বাইরে কোন দুঃস্থ দেশকেও সাহায্য করতে পারি, আমরা শ্রীলঙ্কাকে ঋন দিয়েছি, বাংলাদেশ নেপালকে সাহায্য দিয়েছি। এতে করে প্রতিয়মান হয় যে, হেনরি কিসেঞ্জারের মন্তব্য মিথ্যা বলে প্রমানিত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নরপিশাচরা যারা দেশটাকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিনত চায়। তাদের একজন অর্থমন্ত্রী ছিলেন সাইফুর রহমান, বাড়ি সিলেটে। তিনি একটি মন্তব্য করেছিলেন দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, তাহলে বিদেশের সাহায্য কমে যায়, এটা কি কোন বিবেকবান মানুষের কথা? এটা কি দেশের আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মন্ত্রীর কথা হতে পারে? আসলে বিএনপি জাতিকে ভিক্ষুক করে রাখতে চাই যাতে করে বিদেশ থেকে সাহায্য এনে তাদের নেতাকর্মীদের উদরপূর্তি করে হৃষ্টপুষ্ট করতে চাই। দেশ ও জনগণ চুলোয় যাক, এটাই হলো বিএনপি’র রাজনীতি।

তিনি আরো বলেন, সরকারের কৃষি বান্ধব নীতির ফলে যে সব চরে বালির পর বালি, ধু ধু বালি চর, লালমনিরহাট-তিস্তা-যমুনার চর সহ বিভিন্ন এলাকায় শুধু বালি ছাড়া আর কিছু নাই, সেসব এলাকায় মিষ্টি কুমড়া, লাউ সহ বিভিন্ন কৃষি পন্য উৎপাদন হচ্ছে, এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা’র তীক্ষè বুদ্ধি ও তীক্ষè মেধার ফলে সম্ভব হয়েছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপি’র ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে, তারা যেন দেশে কোন রকম সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত নসাৎ করে দিয়ে আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, সদস্য জহির উদ্দিন তেতু, নজরুল ইসলাম তোতা, শাহাব উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুল মান্নান, আতিকুর রহমান কালু, সৈয়দ হাফিজুর রহমান বাবু, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, আলিমুল হাসান সজল, জয়নাল আবেদীন চাঁদ, ইউনুস আলী, মোখরেশুর রহমান কচি, মাসুদ আহমদ, কে এম জুয়েল জামান, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজপাড়ার থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমত উল্লাহ সেলিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কানিফ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ, নগর তাঁতী লীগ সভাপতি আনিসুর রহমান আনার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু সহ নেতৃবৃন্দ।