মঙ্গলবার , ২৭ মার্চ ২০১৮ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বাড়ছে স্ট্রোক ও মৃগী রোগীর সংখ্যা

Paris
মার্চ ২৭, ২০১৮ ২:১৪ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:  সারাবিশ্বে অসংক্রামক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ২০ শতাংশই স্নায়ুরোগী। এর অধিকাংশই উন্নয়নশীল দেশের। এসব রোগীদের বড় অংশই মূলত স্ট্রোক ও মৃগী রোগে আক্রান্ত। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এমন রোগীর সংখ্যা। এতে সরকারের উদ্বেগও বাড়ছে। তাই সতর্ক অবস্থান নিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্নায়ুরোগীর চাপ সামলাতে ৩০০ শয্যার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই সোয়া চারশ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে স্নায়ুরোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ লাখ। প্রতি লাখে ২৫০ জন এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর স্নায়ুরোগের মধ্যে স্ট্রোক মৃত্যুর অন্যতম কারণ। তবে সময়মতো চিকিৎসা হলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

স্নায়ুজনিত রোগ, বিশেষ করে স্ট্রোক ও মৃগী রোগীদের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৩০০ শয্যার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এর বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগে রোগীর চাপ দিন দিন বাড়ছে।

এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বহির্বিভাগে নিউরোলজি রোগীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৭৪৪ জন এবং নিউরোসার্জারি রোগীর সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৪৯৫ জন। ২০১৬ সালে বহির্বিভাগে নিউরোলজি রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩১০ জনে এবং নিউরোসার্জারি রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৫৮১ জনে।

এদিকে, নিউরোয়েন্স ইনস্টিটিউটের অন্তর্বিভাগে ২০১৩ সালে নিউরোলজি ও নিউরোসার্জারির রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৮৬ জন ও ১ হাজার ৪৩৫ জন। ২০১৬ সালে সে সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৮ হাজার ৫৫০ জন ও ২ হাজার ১ জন।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, স্নায়ুরোগে আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের শয্যা তিনশ থেকে বাড়িয়ে আটশতে উন্নীত করা এবং জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন বিভাগ সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে ‘এক্সপানশন অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এর কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। শের-ই-বাংলা নগর প্রশাসনিক এলাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসেয়েন্সেস ও হাসপাতালের লাগোয়া দক্ষিণ প্লট নং এফ-২-এ প্রকল্পটি বাস্তবয়ন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ১৫ তলা ভিতের (তিন তলা বেজমেন্ট ও ১২ তলা ভবন) ভবন নির্মাণ করা হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে স্ট্রোক, প্যারালাইসিস, বার্ধক্যজনিত স্মৃতিবিভ্রম, পারকিনসনিসম ইত্যাদি বার্ধক্যজনিত রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে।

বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে মৃগী রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এ ছাড়া রয়েছে মাথাব্যথা, নিউরোপ্যাথি, মস্তিষ্কের ঝিল্লি ও মস্তিষ্কের প্রদাহ, মস্তিষ্কের টিউমার, মস্তিস্কের আঘাত, মেরুদণ্ডের আঘাত, মানসিক রোগী, ক্রমোজমাল ডিজঅর্ডার, জেনেটিক ডিজঅর্ডার ইত্যাদি রোগ। প্রতি একহাজার জনের মধ্যে ৬০-৭০ জন আক্রান্ত হচ্ছেন এসব রোগে। এর সঙ্গে প্রায়ই যুক্ত হচ্ছে রোড-ট্রাফিক ইনজুরি ও বিভিন্ন আঘাতজনিত সমস্যা।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ  বলেন, ‘এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগের সেবা বাড়ানো। স্নায়ু রোগে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যমে মৃত্যুহার কমানো; চিকিৎসক, সেবিকা, প্যারামেডিক্স ও অন্যান্য সহযোগীদের বিশ্বমানের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করে সারাদেশে নিউরো সেবা পৌঁছে দেওয়া; গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা এবং দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করাও এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।’

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য এমডি, এমএস, এফসিপিএস কোর্সে আসন সংখ্যা বাড়ানো এবং এসব প্রশিক্ষিত জনবল ভবিষ্যতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় স্নায়ুরোগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে।’

 

বাংলা ট্রিবিউন

 

সর্বশেষ - জাতীয়