বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের তরঙ্গ যোদ্ধা কামাল ভাই

কলকাতা তখন সত্তর দশকের গণ আন্দোলনের কেন্দ্র। চলছিল রাজনৈতিক সংঘর্ষ। আর ওপার বাংলা (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) জুড়ে পাক সেনার বিরুদ্ধে অকুতোভয় বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা মরণপণ সংগ্রামে লিপ্ত। শুধু কি মাঠ-ঘাট ধান-বেগুন খেতের আড়ালে লড়াই ? না, এর পাশাপাশি ছিল আরও এক তরঙ্গ যুদ্ধ। পাকিস্তান রেডিওর বিরুদ্ধে আকাশবাণী কলকাতা ও স্বাধীন বাংলা বেতারের যৌথ লড়াই।

এই লড়াইয়ে ওপার বাংলার বেতার তরঙ্গ যোদ্ধাদের অন্যতম এম আর আখতার মুকুল, ফয়েজ আহমেদ এবং কামাল লোহানী। পাক বিরোধী প্রবাসী মুজিবনগর সরকার (অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার) তখন পরিচালিত হচ্ছে কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ৫৭/৮ এর বাড়ি থেকে। এই বাড়িতেই অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের কার্যালয়ের সংলগ্ন ঘরে বিশ্ব বেতার ইতিহাসের এক পর্ব রচিত হয়।

বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাড়ি থেকেই ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ তথা বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের ঘটনাক্রম সম্প্রচারিত হতে থাকে। সংবাদ পরিচালনার প্রধান দায়িত্বে ছিলেন কামাল লোহানী। সাধারণ কথায় কামাল ভাই। পুরো ১৯৭১ এর যুদ্ধ পর্ব, পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ-বাংলাদেশের জন্মের অনবদ্য ইতিহাস কেন্দ্র হয়েই থাকবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র।

কূটনৈতিক সবদিক বজায় রেখেই প্রথমে শিলিগুড়ি পরে কলকাতা থেকে বেতার কেন্দ্রটি পরিচালনার অনুমতি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। এই ইতিহাসের দুই প্রত্যক্ষ অংশীদার লেখক সাংবাদিক এম আর আখতার মুকুল ও কামাল লোহানী স্মৃতিকথায় জানিয়েছেন, দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে অস্খায়ী সরকারের আলোচনায় রেডিও চালানোর অনুমতি প্রদানের বিষয়টি। সূত্র: কলকাতা 24