বার্সেলোনায় এক বছর ফ্রীতে খেলা দেখা যাবে…..

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্কঃ

বার্সেলোনায় এক বছর বিনা মূল্যে খেলা দেখা যাবে, যদি জাভি বার্সেলোনার কোচ না হন।

না, বার্সেলোনায় এমন কোনো নীতিমালা পাস হয়নি যে ক্লাব কিংবদন্তিদের কেউ কোচ না হলে ক্লাবের সদস্যরা বিনা মূল্যে খেলা দেখতে পারবেন। বরং এক সভাপতি পদপ্রার্থীই এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ক্লাবের বর্তমান অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য জাভিকেই ত্রাতা মানছেন ক্লাবের অধিকাংশ সমর্থক। সেই জাভিকে কোচ বানানোর জন্য তিনি কতটা বদ্ধপরিকর, সেটা বোঝাতেই এত বড় প্রতিশ্রুতি তাঁর।

জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ পদত্যাগ করায় নতুন সভাপতি নির্বাচিত করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে বার্সেলোনার জন্য। অন্তর্বর্তীকালে কাজ চালানোর জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই সে কমিটির। এরই মধ্যে আর্থিক দুর্দশা, মেসির চুক্তি নবায়নে অনীহা মিলিয়ে বার্সেলোনায় খুব দ্রুত কিছু রদবদল দরকার। তাই ২৪ জানুয়ারিতে কে নির্বাচিত হন, সেটার ওপর ক্লাবের অদূর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ভিক্তর ফন্ত নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে তাই ভর করেছেন জাভিতেই।

গত মৌসুমে রোনাল্ড কোমানকে কোচ করার আগ থেকেই জাভিকে বার্সেলোনায় ফেরানোর কথা বলছেন ফন্ত। বার্তোমেউর কড়া সমালোচক ফন্ত বহু আগ থেকেই বার্সেলোনা সভাপতি পদপ্রার্থী। বার্সেলোনাকে আগের রূপ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ক্লাবে জাভিকে ফেরানোকেই মূল করণীয় বলে ধরে নিয়েছেন তিনি। এতটাই যে কোমান ক্লাবে যোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফন্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি সভাপতি হলেই চাকরি খোয়াতে হবে কোমানকে। কারণ, সেদিনই জাভিকে ফিরিয়ে আনবেন তিনি। গত চার মাসে নিজের সিদ্ধান্ত বদলের কোনো কারণ খুঁজে পাননি ফন্ত।

এরই মধ্যে নতুন নির্বাচন চলে এসেছে। নতুন ইস্যুও চলে এসেছে, মেসির ক্লাব ছাড়তে চাওয়া। কিছুদিন ধরে তাই নতুন কোচ নয়, মেসিকে ধরে রাখাটাই মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে ক্লাবের জন্য। আর একজন বাদে বাকি সব পদপ্রার্থী মেসিকে ধরে রাখার জন্য যা যা দরকার, সব করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ফন্তও সে দলেই আছেন। তবে তাঁর মূল অস্ত্রকেও ভোলেননি। জাভিকে তাঁর চাই-ই চাই। কিন্তু জাভি কি সেটা চান?

বছরের শুরুতেই জাভির কাছে প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। কিন্তু বার্তোমেউর অধীনে কাজ করতে রাজি নন বলে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন সাবেক মিডফিল্ডার। এখন বার্তোমেউ নেই, তবু তাঁর ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পিরিওদিকো দে কাতালুনিয়ার কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাভি বলেছেন, বর্তমান সভাপতি নির্বাচনে জড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই তাঁর। এবং বর্তমান ক্লাব আল সাদে তিনি সুখে আছেন। সেখানেই আপাতত থাকতে চান।

এভাবে নির্বাচনের জয়ের একটা অস্ত্র হাতছাড়া হতে দেবেন কেন ফন্ত? তাই ফন্ত বড় এক প্রতিশ্রুতিই দিয়ে বসেছেন। ‘লা সোতানা’ নামক এক রেডিও অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি নির্বাচনে জিতলে জাভি হার্নান্দেজ বার্সেলোনায় আসবেন। যদি না আসেন, তাহলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, মৌসুমের টিকিটধারীদের এক বছরের টাকা আমার পকেট থেকে দেব।’ ফুটবলপাগল অধিকাংশ দেশের ক্লাবের মতো বার্সেলোনার স্টেডিয়ামের অর্ধেক টিকিট পুরো মৌসুমের জন্য কিনে রাখেন ক্লাবের সদস্যরা। সে অর্থ মৌসুমের শুরুতেই একবারে দিয়ে দিতে হয়। এই বিরাট অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিই বলে দিচ্ছে জাভিকে কোচ বানানোর জন্য কতটা বদ্ধপরিকর ফন্ত।

ফন্তের আগেও এক সভাপতি পদপ্রার্থী নিজের পকেট থেকে সবার টিকিটের মূল্য পরিশোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য বার্সেলোনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কালের। ২০০০ সালে নির্বাচনে জেতার জন্য ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে বার্সেলোনা অধিনায়ক ও সে মৌসুমে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় লুইস ফিগোকে রিয়ালে নিয়ে যাবেন। আর না পারলে মৌসুম–টিকিটধারীদের সে মৌসুমে আর টাকা দিতে হবে না খেলা দেখার জন্য। প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হওয়া সে প্রতিশ্রুতি দলবদলের রেকর্ড ভেঙেই রেখেছিলেন পেরেজ।

ফন্ত কি এমন কিছু করে দেখাতে পারবেন?

সুত্রঃ প্রথম আলো।