বাবুল আক্তারকে অব্যাহতি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চাকরি থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাঁর অব্যাহতির ওই আদেশ পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ অধিশাখা থেকে জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাবুল আক্তারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চাকরি (পুলিশ ক্যাডার) থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

.

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি হয়ে আসার দুই দিন পর গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোডে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।

 

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গত ২৪ জুন গভীর রাতে খিলগাঁওয়ের ভূঁইয়াপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুলকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর আবার তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। ওই জিজ্ঞাসাবাদের সময় পদত্যাগপত্রে সই করেন বাবুল। প্রায় দেড় মাস সেই পদত্যাগপত্র পুলিশ সদর দপ্তরে থাকার পর মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
এর আগে ৩ আগস্ট বাবুল আক্তার তাঁর কর্মস্থল পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়ে লিখিতভাবে কাজে যোগ দিতে চান। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাঁকে জানিয়ে দেন, তাঁকে আর কাজে যোগদান করতে দেওয়া সম্ভব নয়। পরদিন ৪ আগস্ট বাবুল পুলিশ সদর দপ্তরে ডিআইজি (প্রশাসন) বরাবর লিখিতভাবে যোগদানপত্র জমা দেন।

 

এতে তিনি বলেন, স্ত্রী খুন হওয়ার পর দুই সন্তানের দেখাশোনার জন্য কর্মকর্তাদের পরামর্শমতো তিনি শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে দুই সন্তানকে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছেও নেওয়া হচ্ছে। অনুপস্থিতির সময়টা ছুটি হিসেবে নিয়ে তাঁকে কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিতে অনুরোধ করেন বাবুল।

 

পুলিশ সদর দপ্তরে যোগদান করতে না পেরে সই করা পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য ৯ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে আবেদন করেন বাবুল। এতে তিনি বলেন, ‘বিগত ২৪ জুন পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে বাধ্য হয়ে আমাকে চাকরির অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়। স্ত্রীর মৃত্যুশোক, সদ্য মা-হারা দুটি শিশুর ব্যাকুলতায় প্রতিকূল ও বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে আমি চাকরি থেকে অব্যাহতির আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘উক্ত অব্যাহতিপত্রটি প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি, যা আমি স্বেচ্ছায় দাখিল করিনি।’

 

গত ২১ জুলাই চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘শুনেছি, বাবুল আক্তার মানসিকভাবে বিষণ্নতায় ভুগছেন। চাকরি করার মতো মানসিক অবস্থা তাঁর নেই। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। অফিসেও আসেন না। তিনি দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সূত্র: প্রথম আলো