বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে দেশি শিল্প

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে দেশি শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় অর্থনীতি আরো সম্প্রসারণ করতে হবে। তাহলেই মানুষের কাছে অর্থ যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল প্রাক-বাজেট আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা নানা খাতে ট্যাক্সসহ প্রণোদনা প্যাকেজের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

kalerkantho

সভায় এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট এ কে এম সেলিম ওসমান, বিটিএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন, বাংলাদেশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুল ইসলাম, এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবাবুল আলম, বাংলাদেশ ওমেন চেম্বার প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহমেদ, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার প্রেসিডেন্ট রূপালী হক চৌধুরী, ওমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শাহরুক রহমান এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার অংশ নেন।

আগামী বাজেটে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে—এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় অর্থনীতি আরো সম্প্রসারণ করা হবে। এটা করতে পারলে সবার হা-হুতাশ কমে যাবে। সবার কাছে অর্থ যাবে। একদিকে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে রাজস্ব আদায় বাড়ানো আবার এতে অন্য কোনো বিষয় মুখোমুখি চলে না আসে সেদিকেও লক্ষ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিকে সুসংহত করার ওপর জোর দেওয়া হবে। আমাদের কথা হচ্ছে দেশের সব মানুষ মূল্যবান সম্পদ। প্রত্যেক মানুষের জীবন-জীবিকা যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য সব সময় আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করছি।’

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রাক-বাজেট আলোচনায় দেশের প্রায় সব চেম্বারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ব্যবসায়ী নেতাদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে বেশির ভাগই ট্যাক্সসংক্রান্ত। সভায় তাঁদের উপস্থাপিত দাবিগুলো রেকর্ড করা হয়েছে। যাঁরা বাজেট প্রণয়নে জড়িত, এসব দাবি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হবে। সেখানে যেসব দাবি যৌক্তিক এবং দেশের জন্য মঙ্গলকর মনে হবে সেগুলো অবশ্যই বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

ব্যবসায়ীরা প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর কভিড-১৯-এর কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এতে তাঁদের উপকার হয়েছে বলে তাঁরা স্বীকার করেছেন। তবে যেহেতু করোনাভাইরাস এখনো দেশে রয়ে গেছে, তাই প্রণোদনা প্যাকেজ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তবে এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নিজে ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। আমরা শুধু সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছি। প্রণোদনা প্যাকেজের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করে।’

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তবে এখনো এমন অনেক খাত আছে, যেসব খাতে নানা সমস্যা আছে। তারা প্রণোদনা প্যাকেজের কোনো সুবিধা পায়নি। ব্যবসায়ী নেতারা নতুন খাতগুলোর জন্যও প্রণোদনা প্যাকেজের সুযোগ দাবি করেছেন।

নতুন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার কোনো দাবি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকের (গতকাল) সভায় কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে কালো টাকা সাদা করার মেয়াদ না বাড়িয়ে কিভাবে সরকারের কাজগুলো করা যায়, সে বিষয়ে তাঁরা কথা বলেছেন।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ