বাঘা ও পুঠিয়া প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘায় ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দুইশ ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে। একইসাথে ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে একজন নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বাঘায় পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়টি আড়ানি ও বাউসা ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যায়।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম সাদের আলী। তিনি আড়ানি পৌরসভার গোচর গ্রাম এলাকার মৃত আবু তাহের আলীর ছেলে। ঝড়ের কারণে আতঙ্কিত হয়ে স্টোক করে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে নিহতের স্বজনরা।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সোমবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ দুপুর ১২ টার পরে মুষুলধারে বৃষ্টির সাথে কালবৈশাখী ঝড় ওঠে। এতে ওই গ্রামের অন্তত দুইশটি ঘরের চালা উড়ে যায়। ঝড়ে গাছপালা ভেঙ্গে বাড়ির ওপর পড়ে।
ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার আড়ানি ইউপির হরিপুর, বেড়েরবাড়ি, নুরনোপুর, পৌরসবার খয়েরমিল, গোচর, বাউসা ইউপির দীঘা, বাগড় বাড়ি সহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়াও ঝড়ে আবাদি ফসলের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা।
জানা যায়, জেলার পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার ওপর দিয়ে কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে গেলেও পুঠিয়া আর চারঘাটে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত গোচর গ্রামের রাসু, আব্দুল জলিল ও নজিরের সাথে কথা বললে তারা জানান, আকষ্মিক ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডেবে আমাদের ঘরবাড়িসহ ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। কিভাবে এ ক্ষতি সামলে উঠবো? সরকারের কাছে থেকে কোন সহযোগিতা না পেলে আমাদের খুব সমস্যায় পড়তে হবে। এ সময় তারা সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন।
বাঘা উপজেলার শিক্ষক আমানুল হক জানান, ‘বাঘার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে আমার লিচু বাগামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৮ থেকে ১০ বছরের পুরোনো বেশ কয়েকটি লিচু গাচ উপড়ে গেছে। এতে প্রায় কয়েকে লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছি।’
বাউসা ইউপি চেয়্যারম্যান শফিকুর রহমান জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে ও ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
জেলা পরিষদের সদস্য জয়জন্তি সরকার বিষয়টি শুনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো পরিদর্শন করেন। গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যাবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বাঘা ইউএনও শাহিন রেজা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে শুধু বাঘাতেই দুই শতাধিক গ্রামসহ বিভিন্ন ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, ঝড়ে বাঘার বেশ কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সাহায্যের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স/অ