বাঘায় সড়ক নির্মাণে দেড় শতাধিক গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ

বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘায় পাকা রাস্তার বেড় কাটতে গিয়ে দেড় শতাধিক গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। আজ বুধবার উপজেলার পীরগাছা গ্রামের আফতাব হোসেনের বাড়ি থেকে মাঝপাড়া খোকনের মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৫০০ মিটার পাকা রাস্তার বেড কাটতে গিয়ে দুই পাশে খনন যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে এই গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে উপজেলার উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে পীরগাছা গ্রামের আফতাব হোসেনের বাড়ি থেকে মাঝপাড়া খোকনের মোড় পর্যন্ত ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৫০০ মিটার পাকা রাস্তার নির্মাণকাজ পেয়েছেন বাঘা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার নামের এক ঠিকাদার। এই ঠিকাদারের খনন যন্ত্র (ভেকু)’র ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম বেড় কাটার সময়ে রাস্তার দুই পাশের বাবলা ২৪টি, জিনজিরা ৩৩টি, কড়ই ৪টি, খেজুর ৩২টি, গামা ৪টি, মেহগনি ২০টি, আম ৫টিসহ দেড় শতাধিক গাছ উপড়ে ফেলে দিয়েছে। এ গাছ উপড়ে ফেলার কারনে রাস্তার দুই পাশের রোপন করা বিভিন্ন ফসল নষ্ট করা হয়েছে।

এ বিষয়ে খনন যন্ত্র (ভেকু)’র ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম জানান, নিয়ম মোতাবেক আমি পাকা রাস্তার বেড় কেটেছি। রাস্তার মধ্যে কিছু গাছ ছিল, সেগুলো কাটতে গিয়ে ব্যক্তিমালিকানা জমির উপর পড়ে কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি নিজের প্রয়োজনে আমাকে দিয়ে কাজটি করে নিয়েছে।

এ বিষয়ে বাউসা ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় মাঝপাড়া গ্রামের জাহিদ হোসেন বলেন, আমি দেখেছি কিছু গাছ ভেকু দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। সেগুলো পাকা রাস্তা নির্মানের প্রয়োজনে হইতো গাছ উপড়ে দেয়া হয়েছে।

বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর ও ফতেপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, পীরগাছা-মাঝপাড়া খোকনের মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে বনবিভাগের পক্ষ থেকে যে, গাছ লাগানো হয়েছে, সেই প্রকল্পের ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সভাপতি আমি। সভাপতি হিসেবে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বন বিভাগের (ফরেস্টার) কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তারা ইতিমধ্যেই তদন্ত করেছে। তবে রাস্তার দুই পাশে প্রায় ১৭ বছর আগে বাবলা, জিনজিরা, কড়ই, গামা, মেহগনিসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপন করা হয়। এ গাছগুলো পাকা রাস্তা নির্মাণের নামে উপড়ে ফেলা হয়েছে।

উপজেলা বন বিভাগের (ফরেস্টার) কর্মকর্তা জহুরুল হক বলেন, রাস্তার দুই ধারে গাছ উপড়ে নষ্ট করার মুল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে বাঘা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার পরামর্শে বন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।

ঠিকাদার আবদুল কুদ্দুস সরকার বলেন, আমি পাকা রাস্তার কাজ করছি। স্থানীয়দের কাজ বুঝিয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে যায়নি, তবে শুনেছি পাকা রাস্তার বেড কাটতে গিয়ে দুই-একটি গাছের ক্ষতি হয়েছে।

বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি জিডি পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।

উপজেলা প্রকৌশলী রতন ফৌজদার বলেন, ওই পাকা রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ উপড়ে ফেলার বিষয়টি শুনে অফিসার পাঠিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। বন বিভাগকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি বলে জানান তিনি।

 

স/শা