বাঘায় লাল মাফলার দেখিয়ে ট্রেন রক্ষাকারী দুই শিশুকে সংবর্ধনা

আমানুল হক আমান, বাঘা:

লাল মাফলার দিয়ে ট্রেন থামানো সেই দুই শিশুর বীরত্বগাথা গল্প আজ সবার কাছে বিস্ময় কর হয়ে উঠেছে। লাল মাফলার দিয়ে ট্রেন থামানো সেই বীর দুই শিশু শিহাব ও টিটোনকে সংবর্ধণা দেয়া হয়েছে। বুধবার সকালে পাকশি রেলওয়ে মাঠে রেল কর্তৃপক্ষের আয়োজনে আনুষ্টানিকভাবে দুই শিশুকে সংবর্ধণা দেয়া হয়।

সংবর্ধণা অনুষ্টানে দুই শিশু শিহাব ও লিটনকে নগদ ১৩ হাজার করে টাকা ও কেষ্ট উপহার দেয়া হয়েছে।

আয়োজিত সংবর্ধণা অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন পাকশির ডিআরএম অসিম কুমার তালুকদার। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পাকশি বিএসটিই আবু হেনা মোস্তফা আলম, ডিটিও শওকত জামিল মোহসী, ডিসিও আনোয়ার হোসেন, ডিএন-২ আসাদুল হক, ডিএনই লোকো শেখ হাসানুজ্জামন, এটিও নাসির উদ্দিন, আড়ানী রেল স্টেশন মাষ্টার মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন প্রমুখ।

এদিকে, আজ বুধবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ঝিনা রেলগেট সংলগ্ন ঝিনা গ্রামে দুই শিশুর বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তারা দুইজন অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। লিটনের বাবা সহিদুল ইসলাম গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করে। আর মা মুনিয়ারা বেগম অন্যের বাড়িতে ঝি-এর কাজ করে। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। এরমধ্যে বড় ছেলে লিটন (১২), মেজো ছেলে মিঠন (১০), ছোট ছেলে টিটোন (৭)। তাদের নিজস্ব কোন জমি নেই। রেলের জমিতে একটি টিনের ছাপরা ঘর তুলে বসবাস করছে।

টিটোনের মা মুনিয়ারা বেগম বলেন, ছেলের এই কাজ দেখে সবাই সমাদর করছে। এই দেখে ভালো লাগছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আমার ছেলেকে দেখতে আসছে।

অপর দিকে শিহাব আলীর বাবা সুমন হোসেন অন্যের জমিতে কাজ করে চার সদস্যের সংসার চালায়। এরাও রেলের জমিতে একটি টিনের ছাপরা ঘর তুলে বসবাস করছে। নিজম্ব কোন জমি নেই। শিহাবের মা রিতা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে। উভয় স্বামী-স্ত্রীর আয়ের টাকা দিয়ে কোন হালে সংসার চলে। শিহাবের আরেকটি সাকিল নামের দুই বছরের ভাই রয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশনের ৪০০ মিটার পূর্ব দিকে ঝিনা রেলগেটে রেল লাইন ভাঙা দেখে লাল মাফলার উঁচু করে দুই শিশু উড়াতে থাকে। চলন্ত তেলবাহী ট্রেনটি থেমে যায়। ফলে দুই শিশুর বুদ্ধিতে ইঞ্জিনসহ ৩২টি বগির তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পায়।

স/অ