বাঘায় ভুট্টাক্ষেতে নারীর লাশ উদ্ধার: স্বামীসহ শ্বশুর-শাশুড়িকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ

বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘায় ভুট্টাক্ষেত থেকে মুখে মবিল মাখানো অবস্থায় গোলাপি বেগম (৪৫) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের চক বাউসা গ্রামের মাঠ থেকে এ লাশ উদ্ধার করে বাঘা থানার পুলিশ।

গোলাপি বেগম উপজেলার আড়ানী পৌরসভার পাঁচপাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মোনির হোসেনের স্ত্রী।

এ ঘটনায় গোলাপি বেগমের স্বামী মোমির হোসেন, শশুর বিচ্ছাদ আলী, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, জা সজেদা বেগমকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

আড়ানী পৌরসভার নারী কাউন্সিলর ও পাঁচপাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম বলেন, ঈদের আগে বুধবার (২৯ মে) রুস্তমপুর হাটে ৪২ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করে গোলাপি। পরের দিন বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয় সে। আর ফিরে আসেনি। বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করা হয়। কোথাও না পেয়ে গোলাপি বেগমের ভাসুর মাজদার রহমান বাদি হয়ে ১ জুন বাঘা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রায় ৪ মাস আগে গোলাপি বেগম ৬ বছরের ছেলে সন্তান মারুফ হোসেনকে রেখে রুস্তমপুরের এক যুবকের সাথে পরকিয়া করে ঘর ছেড়ে চলে যান। গোলাপি বেগমের স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় পরে তিনি ও স্থানীয় আ.লীগের নেতারা পুনরায় তাকে বুঝিয়ে স্বামীর বাড়িতে আনা হয়।

গোলাপি বেগমের শাশুড়ি মরিয়ম বেগম বলেন, আমার ছেলের বৌ-এর পেটে ৬ মাসের সন্তান রয়েছে। আমার ধারণা যার সাথে পরকিয়া ছিল। সে এমন কাজ করেছে। তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এর রহস্য বেরিয়ে আসবে।
গোলাপি বেগমের শশুর বিচ্ছাদ আলী বলেন, আমার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় গোলাপি নিজের ইচ্ছামতো চলাফেরা করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন কথা শুনাতো সে। ফলে আমরা দেখেও না দেখার ভান করে চলি। এরমধ্যে আমার ছেলে ও নাতীকে রেখে অন্য একটি ছেলের সাথে চলে গিয়েছিল। এলাকার লোজনকে ধরে পুনরায় ফিরে আনা হয়েছে। সর্বশেষ বিদ্যুতের বিল দেয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়, আর ফিরে আসেনি। পরে চকবাউসা গ্রামের লালু প্রামানিকের ভুট্টাক্ষেতে লাশ পাওয়া গেলো।

এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসীন আলী জানান, খরব পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে লাশের পাশে থেকে একটি কালো বোরকা, এক জোড়া স্যান্ডেল, একটি গুলের কোটা পাওয়া যায়। ওড়না দিয়ে গলা বেচানো ছিল। তার মুখমন্ডলে মবেল মাখানো ছিল। এ বিষয়ে ধারণা করা হচ্ছে অন্য জায়গায় তাকে হত্যা করে চকবাউসা গ্রামের লালু প্রামানিকের ভুট্টাক্ষেতে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি জানান, এ বিষয়ে গোলাপি বেগমের স্বামী মোমির হোসেন, শশুর বিচ্ছাদ আলী, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, জা সজেদা বেগমকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

স/শা