বাঘায় ভাঙ্গা রাস্তায় চলাচলে মানুষের দূর্ভোগ

আমানুল হক আমান:
রাজশাহীর বাঘায় ভাঙ্গা রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ দূর্ভোগে পড়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তে কোথাও জমে আছে ময়লা পানি আবার কোথাও কাদা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আবর্জনা, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এই ভোগান্তির মধ্যে চলাচল করছে পথচারীরা।

বাঘা-আড়ানী সড়কের নতুনপাড়া, তেঁথুলিয়ার মাউদপাড়া, আড়ানী সিএনজি মোড় নামকস্থানে সড়কের বেহালদশা। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে বাঘা, চারঘাট, পুঠিয়া, বাগাতিপাড়ার মানুষ চলাচল করে। ফলে গর্তের কারনে কিছু কিছু সময়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। চার উপজেলার মানুষ ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। ফলে চলাচলে অনুপযোগী রাস্তা খানাখন্দে ভরা থাকায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। সড়ক সঠিকভাবে সংস্কার না করায় ও অতিবৃষ্টির কারনে প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র বাঘা ও আড়ানী বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কেনাবেচা ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এছাড়া বাঘা রহমতুল্লাহ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে কাদা পানিতে মাখামাখি। রাস্তায় ইট-পাথর নেই বললেই চলে। আর কিছু অংশে বড় গর্তে পানি জমে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এরমধ্য ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রীবাহী বাস, লেগুনা এবং মালবাহী ট্রাক ।

পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড এলাকার চৌরাস্তার মোড় থেকে সড়কঘাট মোড় পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের অবস্থা ভালো নয়। এই সড়ক মাস কয়েক আগে ড্রেন নির্মাণসহ সংস্কার করা হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়।
উপজেলার প্রাাণ কেন্দ্রে বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের সড়কটির একই অবস্থা। ফলে দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও চলাচলকারী মানুষ। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই রাস্তার কাদা-পানি মাড়িয়ে পার হতে গিয়ে বেশির ভাগ সময় শিশু শিক্ষার্থীরা পড়ে গিয়ে জামাকাপড় ও বইপত্র ভিজে যায়। এমনকি কাদা-পানির মধ্যে পড়ে অনেকে ক্লাসে উপস্থিত না হয়ে বাড়িতে ফিরে যায়।


স্থানীয়দের অভিযোগ বাঘা প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া সত্বেও বেশির ভাগ রাস্তা খানাখন্দ ও কাদা-পানিতে ভরা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অধিকাংশ জায়গায় পানি জমে রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে।

শীত মৌসুমে এসব সড়ক পরিণত হয় ধুলার রাজ্যে। আর বর্ষাকালে থাকে কাদা-জলে একাকার। গর্তে আটকে অনেক সময় রিকশাও উল্টে যায়। রিকশা থেকে পড়ে অনেক যাত্রীদের হাত-পা ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পৌরসভার দায়িত্বহীনতা ও সঠিক তদারকির অভাবে নকশা বহির্ভূতভাবে কাজ করার কারনে রাস্তার বেহাল দশা।

বাঘা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মহিদুল ইসলাম বলেন, অঘোষিত পর্যটন কেন্দ্র প্রাকৃতি কন্যা বাঘা। প্রায়দিনই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে বাঘা শাহী মসজিদ, দিঘি ও মাজার।

হাল্কা বৃষ্টিতে পানি জমে পুরো রাস্তায় কাদা-জলে একাকার হয়ে যায়। এছাড়া বাঘার বাজার থেকে শাহী মসজিদ, মাজারে বর্তমানে যেতে হচ্ছে কাদা-জল মাড়িয়ে। এই সড়ক দিয়ে যানবাহন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ চলা-ফেরা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ফলে ক্রমেই পর্যটকরা বিমুখ হয়ে পড়ছে। বাঘা মসজিদ দর্শনে আসা লালপুর বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইমাম হাসান মুক্তি বলেন, এত সুন্দর একটা পর্যটন স্পটের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা দেখে ভ্রমণ আনন্দই মাটি হয়ে গেল।

বাঘা নারায়নপুর মহল্লার সেলিম আরিফ বলেন, নিয়মানুযায়ী কোন রাস্তা ভালোভাবে সংস্কার করতে দেখিনি। টুকটাক কাজ হয়, কিছুদিন না যেতেই পিচ ওঠে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়। “কম বা বেশি, বৃষ্টি যে পরিমাণই হউক না কেন, রাস্তায় পানি জমবেই। একদিন আগের বৃষ্টির পানি এখনো জমে আছে। সড়কে প্রাায় পনের বছরের পুরোনো দেড় ফুট প্রশস্ত নিষ্কাশন নালাটি দিয়ে ঠিকমতো পানি বের হয় না।

বাঘা পৌরসভার প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বর্তমান মেয়র পৌরসভার উন্নয়নে অনেক কাজ করছেন। ইতিমধ্যে অনেক রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। এখানো অনেক রাস্তার কাজ চলছে। সড়কের দু’পাশের সরু নালা দিয়ে পানি সরতে দেরি হওয়ার কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড থেকে সড়কঘাট পর্যন্ত নতুন ড্রেনও নির্মাণ করা হয়েছে।

বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলী বলেন, আগামী বর্ষায় এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।
স/শ