বাঘায় বৈশাখ বরণে চলছে নানান প্রস্তুতি

আমানুল হক আমান, বাঘা: 
রাজশাহীর বাঘায় বৈশাখ উৎসব উপলক্ষে নানা প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা চত্বরে তৈরী করা হচ্ছে বিশাল আকারে একটি হাতি। সেই সাথে তৈরী হচ্ছে মঞ্চ।
বৈশাখে নিজেকে উপস্থাপন করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন তরুণ-তরুণীরা। নতুন কাপড় কেনার ধুম পড়েছে দোকানগুলোতে। বাংলার ঐতিহ্য কুলা, ঢেঁকি, মাথাল, ডুগি, তবলা, একতারা, অংকন করা লালপেড়ে সাদাশাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবী ও গামছা কিনতে প্রধান প্রধান মার্কেটগুলোতে যেন ঢল নেমেছে। এদিক থেকে মাঝ বয়সিরাও পিছিয়ে নেই বৈশাখী উৎসবের আয়োজন থেকে। তারাও কিনছেন সাধ্যমত পোশাক।

অন্যদিকে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নিতে এবার নতুন পোশাক পরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন উপজেলার সাদা মনের মানুষ খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন শমেস ডাক্তার। তিনি বলেন, তাদের আমলে আজকের ন্যায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন হতো না। জমিদারের (পূর্ণী) খাজনা আদায় আর মহাজনের হালখাতা বৈশাখের বার্তা আনতো। সেকালে হালখাতা আর পিঠা খাওয়ার মাধ্যমে নববর্ষ উদযাপন করতো সবাই। বর্তমান সময়ে নতুন শাড়ি কাপড় পরে গান গেয়ে যে নববর্ষ উদযাপন সেটি ওই আমলে ছিল না। হালখাতার মাধ্যমে মানুষ বুঝতো নতুন বছর এসেছে। অথচ কালের বিবর্তনে তা পাল্টে সংস্কৃতিমনায় বৈশাখের উৎসব ছড়িয়ে পড়ছে এখন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।

প্রতিবারের ন্যায় বৈশাখে এবারও রয়েছে নানা কর্মসূচি। এখানে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বাঙালি উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, আবেগ আর উল্লাসে উৎসব মুখর পরিবেশে মেতে উঠবে বৈশাখ বরণে।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানে বৈশাখের ভোরে রাস্তায় চলবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এটি এখন কেবল রমনার বটমূলে সীমাবদ্ধ নয়, এ উৎসব এখন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান হবে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বটমূল চত্বরে। এখানে সকালে ডাল দিয়ে সজনে ডাটাসহ পান্তা ইলিশের পর দিনভর চলবে বাঙালির সংস্কৃতি পল্লী গীতি, বাউল, লালন, ভাটিয়ালি, হাছন, জারি-সারি ও রবীন্দ্র-নজরুল গানসহ লাটি, হা-ডু-ডু, বদন, বানর ও সাপ খেলা। সাংস্কৃতিক অঙ্গন উপজেলা শিশু একাডেমির শিল্পীরা এ উৎসবকে ঘিরে নাটক, কবিতা, সংগীত ও নৃত্যের জোর মহড়া শুরু করেছে। গত কয়েকদিন থেকে নববর্ষকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন সংগঠন ও সাংস্কৃতিক জোট তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে নানা বৈচিত্রের সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছেন। ফলে মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রাণবন্ত করার জন্য উপজেলা চত্বরে তৈরী করা হচ্ছে একটি বিশাল হাতি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, ছোটবেলায় হাতি দেখতে খুব মজা পেতাম। কিন্তু এখন হাতি তেমন চোখে পড়ে না। অনেক কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এগুলোকে তুলে আনতে, বর্তমান প্রজন্মের কাছে দৃষ্টিনন্দিত করার জন্য উপজেলা চত্বরে তৈরী করা হচ্ছে হাতি। এছাড়া কানামাছি, গোল্লাাছুট, বদন সম্পর্কে ব্যতিক্রম কিছু করার চেষ্ঠা করছি। এছাড়া বৈশাখ উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি চলছে।

স/শা