বাঘায় পদ্মার চরে ইউএনও ও জনগনের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণ

বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাজীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরে বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এক হাজার ৮৬০টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলামসহ উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারনের পক্ষে আওয়ামীলীগের নের্তৃবৃন্দ।

গতকাল শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, চকরাজাপুর, টিকটিকিপাড়া, মানিকের চর, গোকুলপুর, হঠাতপাড়া, লক্ষীনগর, দাদপুর, পলাশি, নীচ পলাশিসহ ১৫টি চর এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এক হাজার ৮৬০টি পরিবারের মধ্যে প্রতিজনকে ২০ কেচি চাল, এক কেজি ডাল, এক কেজি চিনি, এক কেজি চিড়া, এক কেজি গুড়, আধা ডজন স্যালাইন, দুটি ম্যাচ, আধা ডজন মোমবাতি, আধা কেজি মুড়ি, একটি দিয়াশালাই (লাইট) বিতরণ করা হয়েছে।

ত্রান বিতরণকালে ক্ষতিগ্রস্থদের উদ্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এবং উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারনের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

প্রসঙ্গত গত প্রায় এক মাস যাবৎ  প্রমত্তা পদ্মা ভয়াবহ রুপ নিয়ে গ্রাস করেছে বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলকে। এর ফলে সেখানে বন্যা দেখা দিয়েছে। গত দুই সপ্তায় ক্রমাগত পানি বৃদ্ধির ফলে ডুবে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং  জমির ফসলসহ প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি। পাঁচ শতাধিক পরিবার হারিয়েছে আশ্রয়স্থল।

অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ১১টি বিদ্যালয়ের তিন হাজার শিক্ষার্থীর পড়া-লিখা। ইতিমধ্যে বন্ধও হয়ে গেছে চরের মধ্যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আবার অনেকের রাতের ঘুম হারাম হচ্ছে সাপের ভয়ে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার অভাবে অনেকেই অনাহারে-অর্ধ্যাহারে দিন কাটাচ্ছেন।

পদ্মার চরের প্রধান বাহন এখন টিনের তৈরী ডুংগা। চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী রয়েছে। তারা বাড়ি থেকে ঠিকমত বের হতে পারছেন না। এ সব কারনে বন্ধ হয়ে গেছে এই অঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার বিঘার আখ, পাট, কুল বরই ও নানা রকম সবজিসহ চলতি আমন ধানের।

ত্রাণ কিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান-১ এবং জাসদ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আজিজুল আলম, সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক ওয়াহেদ সাদেক কবীর, আড়ানী পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তার আলী, ওসি তদন্ত হীরেন্দ্রনাথ প্রানামানিক, বাঘা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার, আড়ানী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহীদ।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাউসা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিক্ষক শফিকুর রহমান শফিক, চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিযুল আযম, উপজেলা আনছার ভিডিবি কর্মকর্তা তুহুরা বেগম, বাঘা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবদুল লতিফ মিয়া, উপজেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি শিক্ষক আমানুল হক আমান, আড়ানী পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান নাইম খান, চকরাজাপুর ইউনিয়নের মেম্বার ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মার চরের মধ্যে চরম দূর্দশায় মানুষ বসবাস করছে। তাদের জন্য ৩০ জুলাই থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ বার ত্রাণ দেয়া হয়েছে। তিনি সমাজের সুহৃদ ব্যক্তিদের চরের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানান। তবে দুইদিন থেকে পানি কিছুটা কমছে বলে জানান।

স/আ