বাঘায় ঝড়ে স্কুল ভেঙ্গে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান

আমানুল হক আমান, বাঘা:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম। গত ২৯ মার্চ ঝড়ে স্কুল ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে ১৪১ জন শিক্ষার্থীকে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে।

তবে স্কুলের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করার পর ৪ বান্ডিল টিন ও ৫০ হাজার টাকা অনুদান বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এ অনুদানের টিন ও টাকা এখন পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে না পৌছায় তিন সপ্তাহ যাবত খোলা আকাশে নিচে তারা ক্লাস করছে। সোমবার (২৩ এপ্রিল) থেকে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে বসে তারা পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটি ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বাইরে মাঠে খোলা আকাশের নিচে প্রখর রোদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সোলেমান আলী সিল্কসিটি নিউজকে জানান, স্কুল ঘর ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পখর রোদের মধ্যে ক্লাস করছে। তাই আমরা অভিভাবকরা ছোট ছোট কোমলমতি ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে মারাত্মক উৎকণ্ঠায় আছি।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা জানান, ২৮ মার্চ স্কুল করে বাড়ি চলে আসি। পরের দিন স্কুলে গিয়ে দেখি ঝড়ে সমস্ত ঘরগুলো ভেঙ্গে পড়ে আছে। কোন উপায় না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে ১৪১ শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছি। তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) থেকে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।


স্কুলটি ১৯৫৫ সালে চৌমাদিয়া চরের সিরাজ মন্ডল ও ভানু বেপারী স্থাপন করেন। স্কুলটি নদী ভাঙ্গনের কারনে ৪ বার স্থানান্তর করা হয়। এরমধ্যে চৌমাদিয়ায় চরে ১৭ বছর, তেমাদিয়ায় ১২ বছর, দিয়ারকাদিপুর ২৫ বছর, টিকটিকি পাড়ায় ১০ বছর যাবত পরিচালিত হয়।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুর রহমান বলেন, বারবার স্কুলটি পদ্মা নদীতে ভেঙ্গে যাওয়ায় ২০১৭ সালে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে সেচ্ছাশ্রমে নির্মান করা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ এবার ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। সরকারি যে অনুদান দেয়া হয়েছে, তাতে কিছুই করা সম্ভব হবে না। আমরা নিরুপায় হয়ে পড়েছি শিক্ষার্থীদের নিয়ে।

চৌমাদিয়া চরের সৌরভজান বলেন, আমার নাতী বৈশাখী খাতুন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। রোদের মধ্যে বসে ক্লাস করতে যেতে চাচ্ছেনা। তারপরও তাদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তারা এ রোদের মধ্যে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, স্কুলের পক্ষ থেকে আবেদন করার পর ৪ বান্ডিল টিন ও ৫০ হাজার টাকা অনুদানের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

স/অ