বাঘায় এনজিও’র ঋণ নিয়ে বিপাকে পরিবার, পরিশোধ করলেন মেয়র রাজ্জাক

বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘায় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েন রাশিদা বেগম নামের এক নারী। স্বামী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার কারেন কিস্তি দিতে বিলম্ব হওয়ায় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে তার বাড়িতে গিয়ে চেপে বসেন এনজিও কর্মকর্তারা। নিরুপায় হয়ে ওই নারীর প্রতিবেশী বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক ৯ হাজার ৬০০ টাকা কিস্তি দিয়ে রক্ষা করেন।

জানা গেছে, উপজেলার বলিহার গ্রামের কুমোর আলীর স্ত্রী রাশিদা বেগম (৪৫) ‘বুরো বাংলাদেশ’ বাঘা উপজেলা শাখা থেকে সাংসারিক অভাব অনটনের কারনে ১ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এরপর প্রতি মাসে নিয়োমিতভাবে কিস্তি পরিশোধ করে আসছিলেন। সম্প্রতি তাঁর স্বামী কিডনি ও লিভার রোগে আক্রান্ত হলে গত তিন সপ্তাহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কারনে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু সে চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি ফিরেন।

এদিকে রাশিদা বেগমের বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে তার বাড়িতে গিয়ে নাছড় বান্দা হয়ে চেপে বসেন ব্যুরো বাংলাদেশ এনজিওর চার কর্মকর্তা। তাদের দাবি ঋণের টাকা না নিয়ে অফিসে ফিরবে না। প্রয়োজনে পুলিশকে অবগত করবেন। নিরুপায় হয়ে রাশিদা বেগমের প্রতিবেশী বাঘা পৌর মেয়রের কাছে ছুটে যান। এ সময় পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলে এসে ৯ হাজার ৬০০ টাকা কিস্তি দিয়ে এনজিও কর্মকর্তাদের বিদায় করেন।

এ বিষয়ে রাশিদা বেগম জানান, আমরা গরিব মানুষ। জমির কাগজ দিতে না পেরে ব্যাংকের লোকজন ঋণ দেয়না। তাই ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋন নিয়েছিলাম। টাকা নেয়ার প্রথম দিনে সঞ্চয়সহ ১০ হাজার টাকা কেটে নেয়। কিস্তি দেয়ার পর আরো একটি কিস্তি বাকি থাকতে আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ সপ্তাহ ভর্তি ছিল। অবশেষ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে চারজন অফিসার আমার বাড়িতে এসে টাকার জন্য চাপ দেয়। নিরুপায় হয়ে আমি পৌর মেয়রের কাছে ছুটে যায়। তারপর মেয়র এসে আমার ঋণ পরিশোধ করে দেন।

তবে ঋণের টাকা চাপের মুখে নেয়া হয়নি দাবি করে ব্যুরো বাংলাদেশ এর বাঘা শাখা ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন জানান, প্রতি শুক্রবার আমাদের খেলাপি (বকেয়া) ঋণ গ্রহণ প্রোগ্রাম করতে হয়। বর্তমানে বলিহার গ্রামে আমাদের তিনজন ঋণ খেলাপি রয়েছে। আমাদের লোকজন সেই টাকা আদায়ের জন্য ওই বাড়িতে বসে ছিলেন।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) গুলো রাষ্ট্র, সমাজ তথা মানবকল্যানে কাজ করার প্রয়াসে রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ করে। তারা কাউকে ঋণ দিলে এই টাকা অবশ্যই আদায় করবে তাতে সমস্য নেই। তবে অসহায় মানুষের উপর জুলুম না করলেও পারতো।

স/অ