বাঘার তিন ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বান্দি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

বাঘা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাঘার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচারনা করতে পারছেনা বলে এক প্রার্থী অপর প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তোলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে রোববার সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে নির্বাচনী আইন শৃংক্ষলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এই অভিযোগ করা হয়।

মোজাহার হোসেন মহিলা ডিগ্রী কলেজের হলরুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে চকরাজাপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) আজিজুল আযম অভিযোগ করে বলেন, গতবার আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলাম। এবারও নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র হয়ে ভোট করছি। এরই মধ্যে নৌকার প্রার্থী ডিএম মনোয়ার হোসেন বাবলু দেওয়ানের কর্মী-সমর্থকরা ৭ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আমার চারটি নির্বাচনি ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দিয়েছে। পোস্টার লাগালে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। রিটার্নিং অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আজিজুল আযমের অভিযোগ ভিক্তিহীণ দাবি করেন নৌকার প্রার্থী ডিএম মনোয়ার হোসেন বাবলু দেওয়ান বলেন, তার কর্মী-সমর্থকরা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে আমি উপজেলা রিটানিং অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন লাভ হয়নি।

অপর দিকে বাউসা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (মোটরসাইকেল) প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফানের স্ত্রী রোজিনা আক্তারী পলি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাড়ি ও পাশের এক বাড়িতে বোমা হামলা করা হয়েছে। অভিযোগ করার পরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি ভোট গ্রহনের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালপ পেপার পৌছে দেয়ার দাবি করেন।

বাউসা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র (আনারস) আরেক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন পলাশ অভিযোগ করেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। এলাকায় তারা ব্যানার-পোস্টার লাগাতে এবং নির্বাচনি ক্যাম্প খুলতে পারছেন না। তারা নির্বাচনি মাঠে নামতে পারছেন না। তাদের অভিযোগ-আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা লাগাতার হামলা করছে।

সরকার দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান শফিক তার অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, নিজের মধ্যে দলীয় দ্বন্দ্বের কারনে মাঠে কাজ করতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আড়ানী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র (আনারস) প্রার্থী নাসির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রচার-প্রচারণায় করতে পারছিনা। নির্বাচন পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।

উপজেলা সহকারি রিটানিং অফিসার মুজিবুল আলমের পরিচালনায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মনিরুজ্জামান, বাঘা থানার তদন্ত অফিসার রফিক, আনসার ভিডিবি অফিসার মিলন কুমার দাস প্রমুখ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সকল প্রার্থীর কথা শুনে তার বক্তব্যে বলেন, আগামী কাল থেকে সকল প্রার্থী পোস্টার ব্যানার লাগাবে। এলাকায় প্রচার করবে। কেউ বাধা দিলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দিয়ে তাৎক্ষনিক জানানোর আহবান জানান। জানালে ব্যবস্থা নেওয়ার আস্বস্থ্য করেন।

আয়োজিন সভায় আড়ানী, চকরাজাপুর ও বাউসা ইউনিয়নে ৯ জন চেয়ারম্যানসহ ১২৬ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২৬ ডিসেম্বর বাঘা উপজেলার আড়ানী, চকরাজাপুর ও বাউসা ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। এ তিনটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।