বাগাতিপাড়ায় এক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ইউএনও’র চিঠি

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চার শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি করার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কলেজের অধ্যক্ষকে ভর্তি বাতিল করার নির্দেশ দিলেও তা না মানায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বোর্ড চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে অধ্যক্ষ কৌশলে রোল-রেজিস্ট্রেশন নম্বর জেনে নিজেই চার শিক্ষার্থীর ভর্তির আবেদনের পর নিশ্চয়ন করেছেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রীদের অভিযোগ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সূত্রে জানা যায়, বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজে (কোড নং ২৪১১৪) একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি চলাকালে চার শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে কৌশলে রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর জেনে নেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন। এরপর শিক্ষার্থীদের হয়ে নিজেই অনলাইনে ভর্তির আবেদন করেন। ভুক্তভুগি চার শিক্ষার্থী হলো বন্যা খাতুন, তানিয়া খাতুন, শারমিনা বানু ও জান্নাতুল ফেরদৌস। ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন।

এ নিয়ে অধ্যক্ষের সাথে কথা বললেও তিনি এ বিষয়ে গড়িমসি করেন এবং চতুরতার সাথে নিশ্চয়ন শেষ করেন। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য গত ১২ জুলাই তিন শিক্ষার্থী এবং ১৭ জুলাই অপর শিক্ষার্থী লিখিতভাবে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন।

এরপরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ দ্রুত ওই চার শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করতে নির্দেশ দেন। কিন্ত অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন ভর্তি বাতিল না করে টালবাহানা শুরু করেন এবং একের পর এক মিথ্যা অপকৌশলের আশ্রয় নেন। অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন প্রতিবছর ভর্তির সময়ই নানা ধরনের জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে লিপ্ত হন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে ভর্তি কার্যক্রমের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় ছাত্রজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই কলেজ থেকে জিপিএ ৫ না পেয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করা এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, ফরম পুরনের সময় তার নিকট ২হাজার ৬০০ টাকা দাবি করেছিল অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন। সে পুরো টাকা দিতে না পারায় ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেওয়ায় সে ভাল ফলাফল করতে পারেননি।

এসব বিষয় তদন্ত করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নাটোর জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর চিঠি দিয়েছেন বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত আলী সেখ। নাটোর জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

তবে দুটি অভিযোগ সর্ম্পকে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি কোন ছাত্রীকে ভর্তি করেন নাই, ভর্তি কমিটি তাদের ভর্তি করে থাকতে পারে। আর আত্মহত্যার চেষ্টা করা ছাত্রীকে তিনি বিনা বেতনে পড়ালেখা করিয়েছেন তাই ফরম পুরনের সময় তার নিকট ২হাজার ৬০০ টাকা দাবির প্রশ্নই আসে না।