বাগাতিপাড়ায় আমের কেজি ৭ টাকা!

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি:

চলতি মৌসুমে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে আম বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। এমন দামে আম বিক্রিকে এক প্রকার লোকসান বলছেন চাষীরা। মধ্যস্বত্বভোগির হাত ঘুরে এমন দামে আম কিনছেন ক্রেতারা। ফলে লাভের মুখ দেখছেন মধ্যস্বত্বভোগীরাই। সম্প্রতি নাটোরের সর্ববৃহৎ আমের আড়ত বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলায় দাম না পাওয়ায় রাস্তায় আম ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছে চাষীরা।

জানা গেছে, এ মৌসুমে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আম সরবরাহের নির্দিষ্ট সময় বেধে দেয়ায় গাছ থেকে বিভিন্ন জাতের আম সংগ্রহে তৈরী হয়েছে সময়ের ব্যবধান। এক জাতের আম সংগ্রহ করে বাজারজাত করতেই আরেক জাতের আম সংগ্রহের উপযোগি হয়েছে। আর বৈরী আবহাওয়া সত্বেও আমের ভালো ফলনে কৃষক খুশি। রোজার শুরুতে বাজারে আম আসায় চাষীরা ভালো দাম পেলেও সম্প্রতি কমতে শুরু করেছে আমের দাম।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লক্ষণভোগ মনপ্রতি ২শ’ ৮০ থেকে ৪’শ টাকা, খিরসাপাত এক হাজার থেকে ১২’শ টাকা ও অনান্য ৩/৪টি জাতের আম ৫’শ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও রানী পছন্দ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে গোপালভোপ, কালুয়া, হাঁড়িভাঙ্গা ল্যাংড়া, জাতের আম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গত ২২ শে মে নাটোরে উৎপাদিত ১২টি জাতের আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী ২৫শে মে থেকে ২৫ শে জুলাই পর্যন্ত বেঁধে দেয়া এ সময়ের অর্ধেক অতিক্রম হওয়ায় খিরসাপাত, ল্যাংড়া, লকনাসহ কয়েকটি জাতের আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আর আম্রপালী, মল্লিকা ও ফজলী ১০ই জুলাই, বারী(৪) ১৫ই জুলাই এবং সর্বশেষ আশ্বিনা আম ২৫শে জুলাই গাছ থেকে সংগ্রহ হবে। একমাসে সংগৃহীত আমগুলো বাজারে কম দামে বিক্রি হওয়ায় বাকী আমগুলো বিক্রির সময় লোকসানের আশঙ্কা করছে চাষীরা।

উপজেলার জামনগর আড়তে আম বিক্রি করতে আসা কৈপুকুরিয়া গ্রামের হাজী হাশেম আলী জানান, তিনি সোমবার চার মণ লকনা জাতের পাকা আম বিক্রি করতে এসে মাত্র ৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন।

আলাউদ্দিন নামের এক বাগান মালিক জানান, বাগাতিপাড়া উপজেলার, মালঞ্চি, তামালতলা, জামনগর এবং পাঁকা ইউনিয়নে বিভিন্ন বাগানে আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। বেঁধে দেয়া সময়ে সংগৃহীত আমের দাম বাজারে নেই। বাজারে আমের সরবরাহ বেশি থাকায় ভোক্তারাও আম কিনছেন বেশী। তাই শেষ মাসে সংগৃহীত আম কি পরিমাণে ক্রয় করবেন ভোক্তারা সেটি নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মিফতাহুল বারী আমের দাম না থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমের দাম কমে যাওয়ায় প্রকৃত আম চাষি ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আমের দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

স/শা