বাগমারায় শ্লীলতাহানির দায়ে অভিযুক্ত সেই শিক্ষক বরখাস্ত

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত সেই শিক্ষক বিপুল কুমার প্রাং-কে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরআগে রোববার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সুপারিশ করে প্রাথমিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যৌন হয়রানির অভিযুক্ত উপজেলার মোহম্মাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিপুল কুমার প্রাং (৪৫) কে সোমবার বিদ্যালয় থেকে চাকরি বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের মোহম্মাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপুল কুমার বিভিন্ন সময়ে স্কুলের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন। শনিবার বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক বিপুল কুমার প্রামাণিক পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর গায়ে হাত লাগায়। পরে ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে আসে। সে সরাসরি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে অভিযোগ দেয় এবং ঘটনাটি খুলে বলে। পরে এলাকার লোকজনও ঘটনাটি জানতে পারেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের শ্লোগান দেওয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে তালাবদ্ধ করে দেন সহকর্মীরা।
থানায় খবর দেওয়া হলে থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান ও থানার ওসি তদন্ত মিজানুর রহমানসহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় আনার চেষ্টা চালিয়ে ক্ষুব্ধ লোকজনের বাধায় ব্যর্থ হয়। তারা ঘটনাস্থলেই অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে অনড় থাকেন। দুপুর দুইটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের শান্ত করেন। পরিবেশ শান্ত হলেও লোকজন শাস্তির দাবিতে অনড় থাকেন। এসময় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির প্রায় অর্ধডজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে শিক্ষক বিপুল কুমারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ দেন। এসময় অভিযোগকারীরা এবিষয়ে পূর্বে একাধিকবার স্কুলে স্থানীয়দের সহযোগতিায় তা মিমাংসা করার বিষয় অবিহিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। কিন্তু তারপরেও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম অবস্থা বেগতিক দেখে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত বসান। আদালতে অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের অপরাধ স্বীকার করলে তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।  শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়।

এ ঘটনার পরপরই রোববার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সুপারিশ করে প্রাথমিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দেন। রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম যৌন হয়রানির অভিযুক্ত শিক্ষক বিপুল কুমার প্রাং-কে আজ সোমবার বিদ্যালয় থেকে সমায়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারী কর্মচারী বিধিমালা ১৮ অনুসারে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তিনি সরকারী বিধি মোতাবেক শিক্ষক খোরাকি ভাতা পাবেন। বর্তমানে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক রাজশাহী কেন্দ্রীয কারাগারে আছেন বলে জানান তিনি।

স/শা