বাগমারায় ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, শিক্ষকের কারাদণ্ড

বাগমারা প্রতিনিধি: বাগমারায় ৫ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিপুল কুমার প্রাং (৪৫) নামে এক শিক্ষককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তিনি উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের মোহম্মাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়,  বিপুল কুমার বিভিন্ন সময়ে স্কুলের মেয়েদের যৌন হয়রানি করতেন। শনিবার বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক বিপুল কুমার প্রামানিক পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর গায়ে হাত দেন। শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। পরে ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে আসে। সে সরাসরি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে অভিযোগ দেয় এবং ঘটনাটি খুলে বলে। পরে এলাকার লোকজনও ঘটনাটি জানতে পারেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের শ্লোগান দেওয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে তালাবদ্ধ করে দেন সহকর্মীরা।
থানায় খবর দেওয়া হলে থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান ও থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমানসহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় আনার চেষ্টা চালিয়ে ক্ষুব্ধ লোকজনের বাধায় ব্যর্থ হয়। তারা ঘটনাস্থলেই অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে অনড় থাকেন। দুপুর দুইটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের শান্ত করেন। পরিবেশ শান্ত হলেও লোকজন শাস্তির দাবিতে অনড় থাকেন। এসময় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির প্রায় অর্ধডজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে শিক্ষক বিপুল কুমারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ দেন। এসময় অভিযোগকারীরা এবিষয়ে পূর্বে একাধিকবার স্কুলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তা মিমাংসা করার বিষয় অবিহিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। অভিযোগকারীরা স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরকেও এজন্য দায়ী করেন। তাদের অভিযোগ, এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বেড়েছে।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বেগতিক দেখে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত বসান। আদালতে অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের অপরাধ স্বীকার করলে তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এসময় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি পরিবর্তনসহ সকল শিক্ষকের বদলির ব্যবস্থা নিবেন এমন আশ্বাস দেন ইউএনও। এতে ক্ষুব্ধ লোকজন তাদের অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। পরে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যান।

স/শা