বাগমারায় যৌতুকের বলি হলেন গৃহবধু মুক্তি!

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় যৌতুকের বলি হলেন গৃহবধু মুক্তি খাতুন (১৭)। সে উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সাদীপুর মহল্লার আব্দুর রহিমের কন্যা। এই ঘটনায় শুক্রবার নিহতের বাবা আব্দুর রহিম বাদী হয়ে জামাইসহ অজ্ঞাত ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিহত মুক্তি খাতুনের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের কুলিবাড়ী গ্রামের আব্দুর সাত্তারের ছেলে সোহেল রানার সাথে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সাদীপুর মহল্লার আব্দুর রহিমের নাবালিকা কন্যা মুক্তি খাতুনের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। প্রেমের সর্ম্পকের সূত্র ধরে গত তিন বছর পূর্বে সোহেল রানা প্রেমিকা মুক্তি খাতুনকে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে যায় এবং বিয়ে করে। বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার কারণে বাবা আব্দুর রহিম মুক্তি খাতুন ও তার স্বামী সোহেল রানাকে মেনে নেয়নি। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই সোহেল রানা মুক্তি খাতুনকে তার বাবা আব্দুর রহিমের কাছ থেকে যৌতুকের টাকা আনতে দাবি করে। মুক্তি খাতুন যৌতুকের বিষয়টি এড়িয়ে গেলে স্বামী সোহেল রানা স্ত্রী মুক্তি খাতুনকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন শুরু করে। দীর্ঘদিন থেকে এই ভাবেই মুক্তি খাতুন স্বামী সোহেল রানার নির্যাতন সহ্য করে আসছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির লোকজনের সাথে মুক্তি খাতুন ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ১২ টার দিকে সোহেল রানা বাড়িতে ফিরে স্ত্রী মুক্তি খাতুনকে ঘুম থেকে ডেকে যৌতুকের টাকা নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। মুক্তি খাতুন টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে স্বামী সোহেল রানা তাকে মারপিট শুরু করে। এতে মুক্তি খাতুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। বিষয়টি উপলদ্ধি করে সোহেল রানা ও তার পরিবারের লোকজন তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। মুক্তি খাতুন মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লে রাতেই তাকে চিকিৎসকের কছে নিলে চিকিৎসক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মুক্তি খাতুনের বাবা আব্দুর রহিমের অভিযোগ, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সোহেল রানার পরিবারের সদস্যরা মুক্তি খাতুন বিষ পান করেছে বলে তাদেরকে জানায়। রাতেই তারা মেয়েকে বাঁচানোর জন্য পরিবারের সদস্যরা ছুটে গিয়ে তার মরদেহ দেখতে পায়।।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামাই সোহেল রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা তার মেয়েকে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে।

বড় বিহানালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলনের সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাতে বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহ বধুর লাশ দেখা যায় এসময় বাড়িতে কেউ ছিল না। পরে স্থানীয় ও পুলিশের সহযোগীতায় লাশ থানায় পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, বিষয়টি জানার সাথে সাথে পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ না করে ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলার কথা স্বীকার করেন তিনি। আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ চেষ্ট করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

স/অ