বাগমারায় বিন্যাবনে ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা !

শামীম রেজা:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন রাস্তার দুপাশে বিন্যাবন রোপণ করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। এসব রাস্তার প্রায় গোটা অংশ জুড়েই রোপন করা হয়েছে বিন্যাবন। এসব রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের এই বিন্যাবনের কারণে ভয়ানক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

একদিকে রাস্তায় বিপদজনক বাঁক তার উপর এসব বাঁকের দুই ধারে বিশাল বিন্যাবন থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। মুষ্ঠিমেয় ব্যক্তিরা এসব বিন্যাবন রোপণ করে তা থেকে সামান্যই ফায়দা পেলেও ওই সব বিন্যাবনের কারণে সৃষ্ট দূর্ঘটনায় ঝড়ে পড়ছে অমূল্য জীবন। বিশেষ করে এসব রাস্তার ঝুকিপূর্ন বাঁকগুলোতে বিন্যাবনের কারণে প্রায় তাদের দূর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভবানীগঞ্জ থেকে থেকে কেশরহাট এবং ভবানীগঞ্জ থেকে তাহেরপুর রাস্তায় সবচেয়ে বিন্যাবন বেশি। এছাড়া ভবানীগঞ্জ থেকে মোহনগঞ্জ ও সইপাড়া হয়ে রাজশাহীর রাস্তায় বিন্যাবন রয়েছে। এসব রাস্তা বেশি গুরুত্বপূর্ন। এসকল রাস্তা দিয়ে হরদম চলাচল করছে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন। এছাড়া উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জের সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের সংযোগকারী রাস্তার দুই ধারেও একই ভাবে বিন্যাবন রোপন করার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাটো দূর্ঘটনা।

ট্রাক চালক স্বপন কুমার ও ব্যাটারী চালিত আটো চালাক আব্দুস সামাদ জানান, এসব বিন্যাবনের কোন বৈধতা নেই। সরকারি রাস্তার দু’ধার যে যেমন পারে দখল করে বিন্যাগাছের শাখা রোপন করে রাখে। পরে বৃষ্টি নামলে ওই বিন্যাবনের শাখা বিশাল গাছে পরিনত হয়। এক সময় এসব বিন্যাগাছ পরিপক্ক হলে তা কেটে রোদে শুকিয়ে পানবরজের ছাউনির কাজে ব্যবহার করা হয়।

 

স্থানীয়দের মতে, এখন পানবরজের ছাউনীর জন্য খড় বাঁশসহ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা যায়। অথচ সামান্য লাভের আশায় কতিপয় স্বার্থন্বেষী মহল যুগ যুগ ধরে সরকারি রাস্তার দু’ধার দখল করে বিন্যাগাছ রোপন করে দূর্ঘটনার আশংকা বাড়িয়ে তুলেছে। বাস চালক ফজলু মিয়া ও সিএনজি চালক রেজাউল জানান, বিন্যাবনের কারণে গাড়ি চালাতে তাদের প্রচন্ড অসুবিধা হয়। ওই সময় রানিং গাড়ির হর্ন বাজালেও তা খুব একটা বুঝা যায় না। তখন উভয় গাড়ীর মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে প্রতিনিয়ত।

এমনি ভাবে গত ১১ জুন হামিরকুৎসা হাট থেকে বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে গোয়ালকান্দি এলাকার রাস্তার এক বাঁকে বিন্যাবনের কারণে মোটরসাইকেল আরোহীর সংঘর্ষ হয় চেউখালি গ্রামের কৃষক আনোয়ারের। পরে পথচারী ও পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ জুন আনোয়ার মারা যায়। শুধু আনোয়ার নয় এই উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার দুই ধারে বিন্যাবনের কারণে এমন দূর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মজিবর রহমান সিল্কসিটি নিউজকে জানান, তিনি ঢাকা থেকে ডে কোচে পুঠিয়া হয়ে বাগমারা ফিরছিলেন। দীর্ঘ পথে তার কোথাও তেমন সমস্যা হয়নি। অথচ শিবজাইটের আগে তাকে বহনকারি আটো চার্জার ভ্যান অপর একটি অটো গাড়িকে ক্রস করতে গিয়ে বিন্যাবনের কারণে মুখোমুখি ধাক্কা লেগে তাদের গাড়িটি উল্টে যায় এতে তিনি অল্পের জন্য প্রানে বেঁচে গেলেও হাঁটুতে মারাত্মক আঘাত পান। তিনি প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবৈধ এসব বিন্যাগাছ অপসারনের দাবী জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নাছিম আহমেদ জানান, বিন্যাবনের কারণে পুলিশের টহলগাড়ী নিয়ে আমরাও সমস্যার সম্মুখিন হই। আমরাও চাই আঁকা বাঁকা রাস্তা ও ঝুকিপূর্ন মোড়ের দু’পাশের বিন্যাবন দ্রত কেটে ফেলা হোক।

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আক্তার জানান, বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করে দ্রত এর সমাধান করা হবে।

স/অ