বাগমারায় বাকিতে ল্যাপটপ না দেওয়ায় বন্ধুকে খুন

বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পাঁচ হাজার টাকা বাকিতে ল্যাপটপ বিক্রি না করার জন্য বন্ধুকে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল আমলি আদালত-২–এর বিচারক আল-আমিন ভূঁইয়ার কাছে অভিযুক্ত মিলন রহমান এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

হত্যাকান্ডের শিকার ওই যুবকের নাম কনক কুমার (২৬)। তিনি ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। নিহত কনক নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কচুয়া গ্রামের দুলাল সরকারের ছেলে। আর অভিযুক্ত মিলন রহমান বাগমারা উপজেলার মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা।

বিচারকের কাছে দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন বলেন, পাঁচ মাস আগে ঢাকায় যাওয়ার পথে কনক কুমারের সঙ্গে মিলন রহমনের পরিচয় হয়। সে থেকে উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। করোনাভাইরাসের কারণে কনক কুমার বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে আসার বিষয়টি তাঁর বন্ধু মিলন রহমানকে জানান। টাকার প্রয়োজন হওয়ায় কনক তাঁর ল্যাপটপ বিক্রির কথাও বন্ধুকে জানিয়েছিলেন।

পরবর্তীতে বন্ধু মিলন নিজেই ল্যাপটপ কিনে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ জন্য কনককে গত ২৪ এপ্রিল ল্যাপটপসহ বাগমারার উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জে আসলে ওই দিন বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ল্যাপটপ বিক্রি নিয়ে আলোচনা হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, কনক কুমার ১৯ হাজার টাকায় ল্যাপটপ বিক্রির কথা জানালে মিলন ১৪ হাজার টাকা দিতে চান। অবশিষ্ট পাঁচ হাজার টাকা পরে দেওয়া হবে বলে জানান। কনক বাকিতে ল্যাপটপ দিতে অস্বীকার জানালে দুজনের মধ্যে বাগবিতন্ড হয়। একপর্যায়ে পাশের আমগাছ থেকে একটি ডাল ভেঙে কনকের মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ মে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে বাগমারা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহত কনক কুমারের বাবা দুলাল সরকার। তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল তাঁর ছেলে বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করা হয়। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় তাঁকে শনাক্ত করা হয়। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি আইন ব্যবহার করে ল্যাপটপসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেজড়িত মিলন রহমানকে গ্রেফতার করে। তারপরই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিলো মিলন।