বাগমারায় প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাগমারায় মঙ্গলবার উপজেলার মোহম্মাদপুর গ্রামে পুরাতন বসতবাড়ি সংস্কারের সময় প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বে পুরা টাকা সরিয়ে সুকৌশলে অন্য টাকা দেখিয়ে মুল ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেছেন। তবে প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধার ও লুকানো ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন। ঘটনা স্থলে পুলিশ ১৯১০ সালের ১ পয়সার ৪টি রুপি উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছেন। প্রাচীন মুদ্রার বিষয় নিয়ে এলাকায় নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের মোহম্মাদপুর গ্রামের মৃত লিয়ালা সোনালের প্রাচীন বাড়ি সংস্কার করতে ৫জন শ্রমিক লাগায় তার ছেলে মাওলানা রফিকুল ইসলাম । প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সংস্কারের তৃতীয় দিনে শ্রমিক একই গ্রামের মোজাফ্ফর, আশরাফুুলসহ কয়েকজন শ্রমিক প্রাচীন মুদ্রা পেয়ে ধস্তা-ধস্তি করে তা নিয়ে ভাগতে থাকে। এ সময় গৃহবধূ টের পেয়ে বিষয়টি ফোনে তার স্বামীকে জানালে সে তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়। ততক্ষণে শ্রমিকরা স্থান ত্যাগ করে। গৃহস্বামী রফিকুল বিষয়টি বুঝতে পেরে সাথে সাথে মোজাফ্ফর ও আশরাফুল নামে শ্রমিকের বাড়ি গিয়ে মুদ্রাগুলো তাদের দাবি করে বাড়ি নিয়ে আসে। তবে অন্য ৩ জন ধরাসার বাইরে চলে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামের লোকজন জড় হতে থাকে। পরে পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থল হতে ১৯১০ সালের ১ পয়সার ৪টি রুপি উদ্ধারের কথা স্বীকার করে।

এদিকে বাসুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও গ্রামের একাধিক বয়স্ক লোক জানান, গ্রামের মৃত লিয়ালা সোনাল নামে এক ধনবান লোক ছিলেন। গত তিন যুগ আগে তার মৃত্যু হয়। কথিত আছে, সে সময় লিয়ালা সোনার বেশ কিছু প্রাচীন মুদ্রা মাটির নীচে রাখে এবং পরবর্তীতে আর খুঁজে না পেয়ে মাথা খারাপ হয়ে মারা যান। এই প্রাচীণ মুদ্রাই তারা পেয়েছে বলে দাবি করেন।

শ্রমিক মোজাফ্ফর ও আশরাফুল জানান, প্রাচীন বাড়ি ভাঙ্গার সময় তারা একটি মাটির পাতিল ভর্তি প্রাচীন মুদ্রা পান। মালিককে না জানিয়ে তারা পাঁচ জনে মুদ্রাগুলো নিয়ে বাড়ি যায়। কিন্তু বাড়ি পৌঁছার পরপরই রফিকুল ধাক্কা দিয়ে তাদের কাছ থেকে পুরা মুদ্রা নিয়ে নেই। পরে পুলিশের কাছে যে মুদ্রাগুলো প্রমাণের জন্য দেখান হয়, সেগুলো ছাড়া আরও বড় আকারের স্বর্ণের টাকার কথা তারা দিয়েছে বলে তারা দাবি করে।

এছাড়া তাদের সাথে থাকা আরো ৩ জন টাকা নিয়ে ভেগেছে বলে জানান তারা। এদিকে উদ্ধারকৃত আরোও মুদ্রা ছিল কিনা বা এগুলো গুপ্ত ধন কিনা এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় লোকদের দাবি, সোনাল একজন ধনাঢ্য মানুষ ছিলেন। তার কাছে প্রচুর স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা ছিল। এগুলো নিয়ে যা চলছে তা রহস্যজনক।

এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা নাছিম আহম্মেদ বলেন, সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে ১৯১০ সালের ১ পয়সার ৪টি রুপি উদ্ধার করেছে। এর বেশী তারা কোন কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। এছাড়া ঘটনা স্থলে গিয়ে জানা যায়, লিয়ালা সোনালের বড় দু’ছেলে আলহাজ আব্দুর রহমান ও আনিছুর রহমান তাদের বাড়িতে পুরনো ও হারানো টাকার ব্যাপারে স্বীকার করে। এছাড়া ওই বাড়িতে তারা আর থাকেন না। তার ছোট ভাই পুরাতন বাড়ি দেখা শোনা করে বলে জানান তারা। অপর দিকে কাজের শ্রমিক অন্য পালাতক দু’জন শ্রমিকের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের জন্য বাড়ির মালিক মাওলানা রফিকুল ইসলাম চেষ্টায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

স/শা