ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে বহু দেশ মাথা ঘামাচ্ছে। তাদের কার কী স্বার্থ আমি জানি না। তবে একটি বিশেষ দেশ তারা পরিষ্কার বলছে, এখান থেকে শেখ হাসিনার সরকারকে সরানো যাবে না। এ কথাটি উদ্দেশ্যমূলক।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অস্থায়ী মঞ্চে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, এটা আমাদের দেশ, মানুষকে বোঝতে হবে, একটা সরকারকে কেন থাকতে (ক্ষমতায়) হবে। আর যে দেশ এ কথা বলে, তাদের আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, সরকারের সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে নয়, বিএনপির সঙ্গে নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। এ দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা বলতে পারি, এই দেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক করুন। যদি এই দেশের মানুষ আপনাদের না ভালোবাসে তাহলে কখনও কিছু নিতে পারবেন না।
মির্জা আব্বাস বলেন, শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ না করলে দেশের মানুষ বাঁচবে। দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। সরকারের লোকেরা হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে। খবরে দেখলাম সব নিয়ম-কানুন ভেঙে জনতা ব্যাংক থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। যিনি নিয়েছেন তিনিও শিক্ষিত, যিনি দিয়েছেন তিনিও শিক্ষিত। এরা কুশিক্ষায় শিক্ষিত। কুমন্ত্রে লালিত এরা। এদের মধ্যে দেশপ্রেম-ভালোবাসা নেই।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা বহুদিন যাবত মিটিং-মিছিল করে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর জন্য বলেই আসছি, কিন্তু সরকার শুনে না। এখন একটি ডিমের দাম ১৫ টাকা। কেন? মুরগি কি ডিম পাড়া বন্ধ করে দিয়েছে? না। তাহলে কেন দাম বৃদ্ধি পেলো। কারণ টাকার মূল্য কমে গেছে, এখন একশত টাকায় ১৪ টাকা কমে গেছে। যারা ব্যাংকে টাকা রেখেছেন দেখবেন সেখানে ১৪ শতাংশ নেই। বিদ্যু মিটার ও কার্ডে কারচুপি করা হচ্ছে। এইভাবে করে দেশের মানুষকে পঙ্গু বানিয়ে ফেলছে।
পাকিস্তান আমলের পুলিশের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, তারা ছিল পাকিস্তানি পুলিশ। আজকে আমরা যখন মানুষের উন্নয়ন, ভোটাধিকার, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর কথা বলি, তখন এই দেশের এক শ্রেণির বাহিনী আমাদের পেটান, গুলি করেন। আমরা তো বাংলাদেশের কথা বলছি। আপনারা কি ঔপনিবেশিক, বিদেশি পুলিশ? সুতরাং অনেক দেনা বাড়িয়েছেন, আর বাড়াবেন না। একদিন এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল প্রমুখ।