বাংলাদেশে মোবাইলের নতুন কলরেট নিয়ে প্রতিবাদ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশে মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত কল চার্জ করা হচ্ছে যা গ্রাহকদের জন্য বাড়তি চাপের তৈরি করছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন নামের একটি সংগঠন।

গত ১৪ আগস্ট মধ্যরাত থেকে নতুন কলরেট চালু হয়েছে।

বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী, সর্বনিম্ন কলরেট ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ কলরেট ২ টাকা করতে বলা হয়েছে।

এরই প্রতিবাদে ঢাকায় আজ একটি মুক্ত সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।

মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গ্রামীণফোন থেকে ৯০ শতাংশ কল হয় অননেটে (জিপি টু জিপি), ১০ শতাংশ কল অফনেটে (জিপি টু অন্য অপারেটর) হয়।

অন্যদিকে সরকারের মালিকানাধীন অপারেটর টেলিটকের ১০ শতাংশ কল অননেটে ও ৯০ শতাংশ কল অফনেটে হচ্ছে।

রবি ও বাংলালিংকের অননেট-অফনেট কলের পরিমাণ ৭০ ও ৩০ শতাংশ।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বোচ্চ কলরেট ১.৫০ টাকা করার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত এটি ২ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদেই এই সম্মেলন।

কেন প্রতিবাদ?

সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলছিলেন বিটিআরসি’কে বিষয়টি জানিয়েছেন তারা।

সর্বনিম্ন কলরেট বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথা বলার খরচ বাড়বে।তিনি বলছিলেন “আমরা বলেছিলাম আপনারা একটা গণশুনানি করেন। আমরা আরো বলেছি ভোক্তাদের কথা শোনেন, আপনাদের কথা বলেন তারপর একটা গণশুনানি করেন। এরপর একটা মূল্য নির্ধারণ করেন। কিন্তু তারা কোনটাই করেন নি”।

“আমরা এটার প্রতিবাদ করতে যাচ্ছি। আমরা আরো কিছু আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। কারণ আমাদের জনগণের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে” বলছিলেন তিনি।

তিনি কলরেটের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলছিলেন “এই রেটটা কিভাবে করলো , কেন করলো সেটা আমাদের কাছে বোধগম্য না। এখানে প্রজ্ঞাপনের মধ্যে একটা ফাঁক আছে। সেটা হল সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ২ টাকা নিতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি ২ টাকা নেন তাহলে কিন্তু কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেই।

পূর্বে অফনেটের কলরেট ছিল ৬০ পয়সা। “আমরা মনে করি এই সিদ্ধান্তটা একটা অনৈতিক সিদ্ধান্ত” বলছিলেন মি. আহমেদ।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মতে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন বাজারের সিংহভাগ শেয়ার একটি মোবাইল কোম্পানির দখলে থাকায় ভিন্ন কলরেটের কারণে এতদিন সুবিধা পেয়ে আসছিল তারা।

বিটিআরসির বক্তব্য, পৃথিবীর মধ্যে 'অলমোস্ট সর্বনিম্ন' কলরেট রয়েছে বাংলাদেশে।

নতুন আইন অনুযায়ী, বাজারের শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও অপেক্ষাকৃত ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিত হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন বাংলাদেশ টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক।

মি. হক বলেছিলেন, “যারা একটু দুর্বল অপারেটর তারা এবার একটু শক্তিশালী হতে পারবে।”

সরকারের এই নির্দেশনার ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে বলে মনে করেন মোবাইল ফোন সেবাদানকারী সংস্থা রবি’র কর্পোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান শাহেদ আলম এর আগে।

মি. আলম বলেন, “অন-নেট আর অফ-নেট ব্যবস্থায় আলাদা কলরেট থাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের কাছে বিভিন্ন অপারেটরের কয়েকটা সিম থাকতো। এখন কলরেট এক হয়ে যাওয়ায় সেই সমস্যা আর থাকবে না।”