বন্যায় প্লাবিত, আশায় বুক বেধে রোপা-আমন চাষে ব্যস্ত কৃষক

আত্রাই প্রতিনিধি:
নওগাঁর আত্রাইয়ে মাঠে মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কৃষকরা। পানি কিছুটা কমার সাথে সাথে শুরু হয়েছে রোপা-আমন ধান রোপন। উপজেলার নিম্নঞ্চল প্লাবিত হলেও বন্যা আসার আগেই চাষযোগ্য জমিতে ধান রোপনে ব্যাস্ত সময় পারকরছেন  কৃষকরা। তবে বন্যার আশংকায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে রোপা আমন ধান রোপন শুরু করেছেন কৃষকরা।

নওগাঁ জেলার খাদ্যশস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত আত্রাইয়ের মাঠগুলো এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেকে বন্যার আশংকায় হাল ছেড়ে দিয়েছেন। গত বছরে ধান রোপনের পর পরই স্মরণকালের বন্যায় ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী মির্জাপুর নামক স্থানের আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক ভেঙ্গে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সকল জমির আবাদি ফসল পানির নিচে তলে গিয়ে সম্পূর্ন ক্ষতি হয়। এতে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক চরম লোকসানের মধ্যে পরে।

তথ্যঅনুসন্ধানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরে বন্যায় ঘর-বাড়ী, বিভিন্ন ফসলাদি, গাছপালা, মাছ, রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎসহ ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

যে কারণে বন্যার পরিস্থিতি না দেখে অনেকে ধান রোপনে ধীরগতিতে চলছে। এবারও মির্জাপুর নামকস্থানে নির্মিত বাঁধে আবারো নতুন করে ফাটল দেখা দেয়ায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন কৃষকরা । ওই স্থানে বাধঁ ভাঙ্গলে আবারো ভয়াবহ বন্যার আশংকা করছেন এলাকাবাসি।

উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক মোঃ আজাদ সরদার জানান, গত বছরের বন্যার করালগ্রাসে আমন আবাদি ধানগুলো নষ্ট হয়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে । এবার প্রায় কিছু পরিমান জমিতে রোপা-আমন চাষ করছি জানিনা ভাগ্যে কি আছে। একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের আমনে প্রায় ১৫-২০ বিঘা জমির ধান বন্যার পানিতে তলে নষ্ট হয়ে গেছে। এবার কিছু জমিতে আমন চাষের প্রস্তুতি নিয়েছি । ইতি মধ্যে প্রায় অর্ধেক জমি রোপন করা হয়েছে কিন্তু বন্যার আশংকায় কিছুটা বিলম্ব করতে হচ্ছে ।

আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের বজ্রপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, এবার ধান রোপন করার পর নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বেশ কিছু আবাদি জমির ধান পানিতে তলে গেছে।

এব্যাপারে আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাউছার জানান, কৃষকরা যেন রোপা-আমন চাষে কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সর্বাক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এবার প্রায় ৬ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । ইতিমধ্যে এলাকায় কিছু পরিমান জমিতে ধান রোপন সম্পন্ন হয়েছে। তবে নিম্নাঞ্চল থেকে পানি দ্রুত নেমে গেলে চাষের লক্ষমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি মনেকরছেন।

 

স/আা