বন্যার্তদের পাশে দাড়াচ্ছে রাবি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া। দুর্ভোগের এ চিত্র নাড়া দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। বন্যা কবলিত এসব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ‘বন্যার্তদের পাশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ১ আগষ্ট কুড়িগ্রামে ত্রাণ সহায়তা দেবার লক্ষ্যে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা।

উদ্যোক্তাদের একজন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আহসান হাবীব রাভী বলেন, ‘সংবাদপত্রের মাধ্যমে বন্যার ব্যাপারে জানতে পেরে কিছু শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেই বন্যার্তদের সহযোগীতা করার। বিষয়টি কয়েকজনকে জানালে তারাও আগ্রহী হয় এবং ২৫ জুলাই থেকে আমরা স্যারদের সাথে যোগাযোগ করে কাজ শুরু করেছি। প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে, আবাসিক হলগুলোতে এবং রাজশাহী নগরীতে টাকা সংগ্রহ করার কাজ চলছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আসলে এত বেশি মানুষ বন্যার কারণে দুর্ভোগের মধ্যে আছে যে, তাদের অনেক বড় সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা হয়ত একটি গ্রামের মানুষদের সহায়তা দিতে পারবো। তাই চেষ্টা করছি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকেও এ বিষয়ে সংযুক্ত করতে। যাতে অনেক মানুষকে সহায়তা করা সম্ভব হয়। এখনো সরকারিভাবে তেমন ত্রাণ সহায়তা তাদের কাছে পৌছায়নি। তাই ব্যক্তি উদ্যোগেই অন্তত কিছু মানুষকে সহায়তা করা চেষ্টা করছি মাত্র।’

উদ্যেক্তারা জানান, যদি তাদেরকে কেউ আর্থিকভাবে সহায়তা করতে চান তাহলে ০১৭৭৯-২৪৭০২২ (বিকাশ একাউন্ট) ও ০১৭৪৩-৪০২৩১৯০ (ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং) নাম্বারে সহযোগীতা পাঠানোর অনুরোধ জানান। এছাড়া ত্রাণ সামগ্রি দিতে চাইলে উক্ত নাম্বার দুটিতে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তারা। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই সহযোগীতা পাঠানোর আহবান জানান তারা।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সহায়তা বক্স নিয়ে টাকা উত্তোলন করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্বতস্ফুর্তভাবে সহায়তা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বন্যার্তদের সহযোগীতার এই উদ্যোগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম ফারুক সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশুনার মধ্যেই আটকে থাকবে না। তাদের সামাজিক দায়িত্বও পালন করতে হবে। দেশের মানুষ যখন দুর্ভোগের মধ্যে আছে তখন তাদের পাশে দাঁড়ানো সেই দায়িত্বর মধ্যেই পড়ে। সেই জায়গা থেকেই শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে। একজন শিক্ষার্থী যখন সামাজিক দায়িত্ব নেয়া শিখবে, যখন তার মাঝে মনুষ্যত্ববোধ কাজ করবে তখন সে কখনোই জঙ্গী কার্যক্রমের দিকে যাবে না। তাই শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ একদিকে যেমন বন্যার্তদের সহযোগীতা করবে তেমনি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে যে হতাশা তাও অনেকটা দূর হবে।’

আরেকজন উদ্যোক্তা অশোক চক্রবত্তী জয় বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথেও কথা বলেছি। তাদেরকে সাথে নিয়ে কয়েকদিনের একটি মেডিকেল ক্যাম্প করারও চেষ্টা করছি। সবাই যদি যার যার জায়গা থেকে বন্যার্তদের পাশে এগিয়ে আসে তাহলে অনেক সহজেই তাদের দুর্ভোগ কমানো সম্ভব।’
স/মি