শনিবার , ১৯ মার্চ ২০২২ | ১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক : হানিফ

Paris
মার্চ ১৯, ২০২২ ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অবিস্মরণীয়, অতুলনীয় আর রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত, দক্ষ একজন মানুষ।

গতকাল শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় সভাপতি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক কিছুই আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারিনি। শুধু তাই নয়, ১৯৭৫-এর পরে সেই ইতিহাসকে বারবার চাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। চারদিকে শুধুই পোড়ামাটির স্তূপ। রাষ্ট্রীয় কোষাগার ছিল অর্থশূন্য। উনার পাশে শুধু ছিল এই সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যেই উনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, সেসময়ই আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ৯.৭৩ শতাংশ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, যা এখনো পর্যন্ত রেকর্ড। এই পরিমাণ প্রবৃদ্ধির হার আর কোনো রাষ্ট্রনেতা করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইতিহাসের মহানায়ক। ১৯২০ সালে এই পুণ্যভূমিতেই (টুঙ্গিপাড়া) তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ইতিহাস তার আপন গতিতে চলে। তাকে ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে ইতিহাস। উনি ছোট থেকেই মানবতাবাদী ছিলেন, মানবদরদী ছিলেন। তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি ছিল। তিনি ছিলেন By born leader!

হানিফ বলেন, আমরা যদি বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলার দু-একটি কাহিনী শুনি তাহলে দেখতে পাবো ছোট থেকেই তিনি মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। উনার সহপাঠী কারো যদি বই না থাকতো, আর্থিক সমস্যা থাকতো, তিনি তৎক্ষণাৎ সেটার সমাধান করে দিতেন। আবার উনি ছিলেন অদম্য সাহসী। ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জে আসেন অবিভক্ত পাকিস্তানের সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী। স্কুলের ছাত্র তখন বঙ্গবন্ধু। শিক্ষকরা তাদের সামনে কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। কিন্তু সে সময়েই বঙ্গবন্ধু অদম্য সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। তিনি শেরে বাংলা সাহেবের সামনে দাঁড়িয়ে স্কুলের সমস্যা গুলোর কথা দাবি আকারে তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, ১৩৪৩ সালে দেশব্যাপী দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। এসময়ও তিনি অসহায় দুঃখী মানুষের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে দেশব্যাপী ছুটে বেড়িয়েছেন। ১৯৪৬ সালে যে দাঙ্গা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু নিজে সেই দাঙ্গা প্রতিহত করেছিলেন। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করতেন। তিনি ধর্ম বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন। মানুষকে মানুষ হিসেবে সবসময় আপন করে কাছে টেনে নিয়েছেন ।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ১৯৪৮ সালে যখন রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, সে সময় বঙ্গবন্ধু সেটার প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপর ১১ মার্চ, ১৯৪৮ যে হরতাল হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু সেটারও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, স্বপ্ন দেখাতেন এবং তাঁর সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ১৯৫২-এর হাত ধরেই আসে ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭০-এর নির্বাচনে সাধারণ মানুষের নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট লাভ করার পরেই তিনি ১৯৭১-এ স্বাধীনতার ডাক দিলেন। ৭ মার্চের ভাষণে সেদিন তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। মূলত সেদিনই কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গিয়েছিলো। সেদিন থেকেই বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ কিন্তু বাঙ্গালিদের হাতে। এরপর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৯ মাস যুদ্ধের পর আমরা পেলাম স্বাধীন বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন মানুষ। আধুনিক পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ১৯৭৫ সালেই তিনি বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। আজকে যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আমরা উৎক্ষেপণ করেছি সেটা তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ একদিন স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করবে। সমুদ্র সীমা নিয়ে মায়ানমারের সাথে আমাদের যে বিরোধ ছিল, সমুদ্র-সীমা আইন ছিল না, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালেই সেই সমুদ্র-সীমা আইন করেছিলেন। সেই আইনের ওপর ভিত্তিকরেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় জয়লাভ করে আমরা বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের প্রায় সমপরিমাণ (১ লক্ষ ৪১ হাজার বর্গ কিলোমিটার) জায়গা সমুদ্রেও পেয়েছি ।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, জাতির দুর্ভাগ্য। বহু আগেই এই দেশ স্বপ্নের সোনার বাংলা হতে পারতো, বঙ্গবন্ধু সেই যাত্রা শুরুও করেছিলেন । কিন্তু ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সেই যাত্রা ভেঙ্গে দেয় পরাজিত শক্তি। আজকে অনেক দেরিতে হলেও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই সোনার বাংলার পথেই হাঁটছে জাতি। আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চরম দরিদ্র দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তকমা পেয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদৃত হচ্ছেন। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই শেখ হাসিনার হাত ধরে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাই পরিণত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

সর্বশেষ - জাতীয়