বগুড়ায় শুভসংঘ’র চাদর ও খাবার বিতরণ

আদমদীঘি প্রতিনিধি : ‘শুভসংঘ নাকি চাদর দিত্তে, শুনা হামি মাটিত ছিচড়া-ছিচড়াই লিবার আলচি। নতুন চাদর প্যাইয়া হামার হেব্বি ভালো লাগিত্তে’ বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার স্টেশন এলাকার ষাটর্ধো প্রতিবন্ধী মরিয়ম বেগম চাদর পেয়ে এসব কথা বললেন।

মরিয়মের মতো চাদর দেয়ার কথা শুনে ঢাকাপট্রি এলাকা থেকে এসেছেন বিধবা নারী যানি বেওয়া। তিনি অন্যের বাড়িতে ঝিঁয়ের কাজ করেন। পুরাতন পাতলা একটি চাদর গায়ে দিয়ে এসে নতুন একটি চাদর পেয়ে বললেন ‘ইংক্যা ভালো চাদর শুভসংঘই এবার হ্যামাক প্ররথম দিল’।

এছাড়া উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম থেকে চাদর নিতে আসা কামার শ্রমিক (দিনমজুর) কমল রায় চাদর পেয়ে বললেন, যে টাকা উপার্যন হয় তা দিয়ে তিনি কোন মতো সংসার চালিয়ে নেন। এর বাহিরে কোনো কিছু কেনার সামর্থ তার নেই। তাছাড়া কামারের দোকানে কাজ করায় লজ্জায় কারো কাছে হাত পেতে চাইতে পারেন না। শুভসংঘ তাকে ডেকে নিয়ে এসে চাদর দেয়ায় তিনিও বেজাই খুশি।

এমন অসহায়দের খুঁজে বের করে প্রায় অর্ধশতাধিক অনাথ, দুস্থ, দরিদ্র ও ছিন্নমূলদের হাতে চাদর তুলে দিয়েছে কালের কণ্ঠ-শুভসংঘ।

উপজেলার সান্তাহার স্বাধীনতা মঞ্চচত্বরে একই মঞ্চে চাদর বিতরণের পাশাপাশি ওই দিন স্টেশনের প্রায় ৩৫-৪০ জন ছিন্নমুল ও পথশিশুদের একবেলা উন্নত খাবার দেয়া হয়েছে। অনেক দিন পর ভালো খাবার পেয়ে খুশিতে তারা অত্মহারা হয়ে পড়েন।

এ সময় পথশিশু জয়নাল আবেদীন জানায়, বাবা নেই- মা ট্রেনে ট্রেনে ভিক্ষা করেন। তাই মানুষ যে খাবার দেয় তা খেয়ে সে দিন কাটায়। তাই ভালো খাবার কতোদিন ধরে খায়নি সেটি তার মনে পরছিল না। অনেক দিন পর শুভসংঘর দেয়া উন্নত খাবার পেয়ে বললো, ঈদ ছাড়া এতো ভালো খাবার আর কখনো সে পায়নি। শুভসংঘ’র খাবার পেয়ে দিনটিকে তার ঈদের দিনের মতোই লেগেছে। জয়নালের মতো একই কথা বললো পথশিশু মহসীন, আলামিন, তুফানসহ অন্যরাও।

অসহায়দের হাতে এসব চাদর ও খাবার তুলে দেন অনুষ্ঠানের অতিথি কালের কন্ঠের বগুড়া ব্যুরো প্রধান লিমন বাসার, শুভসংঘ বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিশির মোস্তাফিজ, শুভসংঘ’র আদমদীঘি শাখার প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম, উপদেষ্টা নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি, লায়ন ফরিদ আহমেদ, সভাপতি জিল্লুর রহমান কমল, সম্পাদক আশফাকুল আশেকিন পান্থ, ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, কালের কণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি আদমদীঘির তরিকুল ইসলাম জেন্টু, শাজাহানপুরের জিয়াউর রহমান, নন্দীগ্রামের ফারুক কামাল, ফটো সাংবাদিক ঠাণ্ডা আজাদ, তান্নি মীর্জা ও তমা প্রমুখ।

এদিকে এসব বিতরনের পাশাপাশি দিনভর চলা ‘ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং’ অনুষ্ঠানে তিন শাতাধিক মানুষ বিনামূল্যে নিজের রক্ত পরীক্ষা করেন।

স/জে