বগুড়ায় বহিষ্কার আতঙ্কে বিএনপি নেতাকর্মীরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বগুড়ায় দলীয় নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়া ও সহযোগিতার অভিযোগে গত কয়েক দিনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩০ নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এতে নেতাকর্মীদের মাঝে বহিষ্কার আতংক বিরাজ ও তারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের পাস থেকে সরে যেতে শুরু করেছেন। এরপরও বহিষ্কৃতরা নিজেদের ত্যাগী দাবি করে নির্বাচনে নেতাকর্মীদের ভোট পাওয়ার আশা করছেন।

তারা বলছেন, ভোটের মাঠ তাদের পক্ষে আছে, তাই নির্বাচিত হলে সংগঠন থেকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হবে।

জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, লন্ডন প্রবাসী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশে উপজেলা নির্বাচন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বারবার নিষেধ করার পরও বগুড়ায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৯ নেতাকর্মী বিভিন্ন উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেন। তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হলেও তা অগ্রাহ্য করেন। এছাড়া কোনো কোনো নেতা অন্য দলের প্রার্থীকে সমর্থন দেন।

জেলা বিএনপির জরুরি সভা থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরি করে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে পাঠানো হয়। রোববার বিকাল পর্যন্ত তিন ধাপে নির্বাচনে অংশ নেয়া ও সহযোগিতার অপরাধে ৩০ নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এর মধ্য জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলমের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জে জাপা মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ রিজুর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। মীর শাহে আলম বহিষ্কার হওয়ায় তার সমর্থকরা শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বহিষ্কৃত বিএনপি নেত্রী বিউটি বেগমের গাড়ি ভাঙচুর করেছে।

এ নিয়ে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪ নেতার বিরুদ্ধে বিউটি মামলাও করেছেন। বহিষ্কার হওয়ার পর থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতারা হতাশ হলেও তা প্রকাশ করছেন না। তারা সরকারি দলের প্রার্থীদের বাধা ও হামলার ভয়ে রয়েছেন। কর্মী না থাকায় ঠিকমতো গণসংযোগও করতে পারছেন না।

ইতিমধ্যে শাজাহানপুর উপজেলায় বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল বাশারের মাইক ভাঙচুর করে পুকুরে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার স্ত্রীকে প্রচারণায় বাধা ও লিফলেট কেড়ে নেয়া হয়।

এদিকে নেতাদের বহিষ্কারের খবরে তাদের পক্ষে থাকা তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বহিষ্কার আতংক দেখা দিয়েছে। অনেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহিষ্কৃত হওয়া নেতাদের পেছন থেকে সরে যেতে শুরু করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতা জানান, বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক গায়েবি মামলার সম্মুখীন হয়েছেন। এসব মামলায় জামিন নিতে ও গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে ও হচ্ছে। পরিবার ফেলে দিনের পর দিন পালিয়ে থাকতে হয়েছে। এরপরও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেয়া বহিষ্কৃত নেতাদের পক্ষে থাকলে তাদের বহিষ্কার হতে হবে। তাই তারা বহিষ্কৃত প্রার্থীদের কাছ থেকে সরে যাচ্ছেন।

বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন জানান, দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়া ও সহযোগিতা করায় ২৯ প্রার্থীসহ ৩০ জনকে তাদের পদ ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া নেতাকর্মীদের নির্বাচন বয়কট ও প্রতিহত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।