বকেয়া হিসাব নিয়ে বিটিআরসির সঙ্গে বসছে সিটিসেল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
দীর্ঘদিনের বকেয়া অর্থের হিসাব নিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসির সঙ্গে বসতে চায়  বন্ধ হওয়ার হুমকিতে পড়া মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল।

বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে পুরাতন মোবাইল ফোন অপারেটরটির শীর্ষ কর্মকর্তারা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদের সঙ্গে দেখা করে এ প্রস্তাব দেন। তারা একটি আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছেন।

তবে এ প্রস্তাবের বিষয়ে বিটিআরসি সাড়া দেবে কিনা তা জানা যায়নি। সব মিলে অপারেটরটির কাছে ৪৭৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে কমিশনের। যদিও সিটিসেল বলছে বকেয়ার পরিমান দুইশ’ কোটি টাকার বেশি হবে না।

এ দিকে দেনা-পাওনা বিষয়ে সিটিসেল কোর্টে গেলে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে মোট পাওনার দুই তৃতীয়াংশ বিটিআরসিতে জমা দেওয়ার কথা বলেছে হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে সিটিসেলের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিটিআরসি তাদের কাছে টাকা পাবে সেটা ঠিক। কিন্তু যে দাবি করা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে দেনার পরিমান ততোটা হবে না। এখন দেনা-পাওনার হিসাব চূড়ান্ত করতেই দ্রুত বসতে চায় সিটিসেল।

অপারেটরটি বলছে, ২০১১ সালে লাইসেন্স অনুমোদনের সময় থেকেই কখনো তাদের নামে বরাদ্দকরা স্পেকট্রাম পায়নি তারা। সে কারণেই বিটিআরসি’র করা হিসেবের তুলনায় তাদের প্রকৃত পাওনা অনেক কম হবে।

সিটিসেল বলছে, তাদের নামে দশ মেগাহার্ডজ স্পেকট্রাম বরাদ্দ থাকলেও তারা ঢাকার বাইরে পেয়েছেন মাত্র ৬ দশমিক ৩ এবং ঢাকার মধ্যে ৮ দশমিক ৮ মেগাহার্ডজ স্পেকট্রাম।

তাদের হিসেবে বিটিআরসি স্পেকট্রাম বাবদ আর কোনো টাকাই পাবে না তাদের কাছে। অথচ বিটিআরসি’র হিসেব বলছে, স্পেকট্রাম ফি বাবদ তাদের পাওনা ২২৯ কোটি টাকা।

সিটিসেলের দাবি অনুসারে যেহেতু স্পেকট্রামের দেনা তাদের নেই সে কারণে স্পেকট্রাম ব্যবহারের ওপর বার্ষিক ফি বিটিআরসি যেটা ধরেছে সেটা কমে আসবে। একই ভাবে সে কারণে বিলম্ব ফি হিসেবে বিটিআরসি’র দাবি করা দেড়শ কোটি টাকার একটি বড় অংশও তখন কমে আসবে।

সিটিসেলের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, রেভিনিউ শেয়ারিং এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের হিসেবে বিটিআরসি তাদের কাছে কিছু টাকা পাবে যেটা তারা নির্ধারিত ১৯ অক্টোবরের আগেই পরিশোধের চেষ্টা করছেন।

অপারেটরটির কাছে বিভিন্ন খাতে বিপুল পাওনা দাবি করে গত ৩১ জুলাই বিটিআরসি প্রথমে ১৬ আগস্টের মধ্যে সিটিসেলের গ্রাহকদেরকে অপারেটর বদল করার অনুরোধ জানায়। পরে সরকার আরও সাত দিন সময় বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে কেন লাইসেন্স বাতিল করা হবে না তা জানতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।

এর মধ্যে সিটিসেল উচ্চ আদালতে গেলে দুই দিনের শুনানির পর দুই কিস্তিতে টাকা পরিশোধের নির্দেশনা দেন বিচারকরা।

সূত্র জানায়, বিটিআরসির বাইরেও অপারেটরটির সবচেয়ে বড় দেনা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকে। এর পরিমান তিন হাজার কোটি টাকার বেশি।

১৯৮৯ সালে দেশের প্রথম মোবাইল অপারেটরের লাইসেন্স পেয়ে সিটিসেল ১৯৯৩ সাল থেকে সেবা দিতে শুরু করে। বর্তমানে এ অপারেটরের ৪৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক সিঙ্গাপুরের টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা কোম্পানি সিংটেল।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের প্যাসিফিক মোটর্সের রয়েছে ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার।

এ ছাড়া ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ফার ইস্ট টেলিকমের হাতে। সেটিও আসলে সাবেক ওই মন্ত্রীরই আরেকটি কোম্পানি।

সূত্র: টেকশহর