ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলা: হামলাকারী রেদোয়ান লাখদিমের বিষয়ে কী জানা যাচ্ছে?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ফ্রান্সের ছোট্ট শহর খেবে-র একটি সুপার মার্কেটে যে বন্দুকধারীর হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে, সে নিজেকে দায়েশ বা ইসলামিক স্টেটের একজন কর্মী বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

কমান্ডোদের অভিযানে রেদোয়ান লাখদিম নামের ওই হামলাকারীও নিহত হয়।

এখন পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন ফ্রান্সের কৌসুলিরা। এই হামলাকারী সম্পর্কে তারা বেশ কিছু তথ্যও পেয়েছে।

লাখদিমের জন্ম ১৯৯২ সালে মরক্কোয়।

ফ্রান্সে কৌসুলিরা বলছেন, জঙ্গি নজরদারির তালিকায় লাখদিমের নাম ছিল।

চরমপন্থি আচরণ আর সালাফি মুভমেন্টের সঙ্গে জড়িত সম্পৃক্ততার অভিযোগে ফ্রান্সে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অতীতে তার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। যদিও তার বিষয়ে সরাসরি কোন তদন্ত হয়নি।

২০১১ সালে ছোটখাটো অপরাধের অভিযোগে লাখদিমের একবার কারাদণ্ডও হয়েছিল।

বাবা-মা এবং বোনদের সঙ্গে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বাস করছেন রেদোয়ান লাখদিম।

শুক্রবার সকালে এই বাসা থেকেই সে সুপারমার্কেটে হামলা করতে গিয়েছিল।

সে বাসা থেকে বের হওয়ার আগে তার একজন বোন আরেক বোনকে স্কুলে নিয়ে যায়।

শুক্রবার সকালে ‘আল্লাহ আকবর’ ধ্বনি দিয়ে খেবে শহরের একটি সুপার মার্কেটে সে কিছু লোককে জিম্মি করে আটকে রাখে।

খবর পেয়ে ফরাসী স্পেশাল ফোর্স সেখানে হাজির হয়।

পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মরক্কো থেকে আসা রেদোয়ান লাখদিম শুক্রবার ফরাসি শহর কারকাসনে গিয়ে একটি গাড়ি ছিনতাই করেন।

এসময় তিনি গাড়ি আরোহীকে গুলি করে হত্যা করেন। ড্রাইভারকেও আহত করেন।

এরপর তিনি খেরে-এর একটি সুপারমার্কেটে ঢুকে চিৎকার করে বলেন যে তিনি দায়েশ (ইসলামিক স্টেট)-এর একজন যোদ্ধা।

এসময় তিনি আরও দু’ব্যক্তি – একজন ক্রেতা এবং একজন দোকান কর্মচারীকে গুলি করে খুন করেন।

সুপারমার্কেটে উপস্থিত অন্য খদ্দেরদের তিনি জিম্মি হিসেবে আটক করেন।

স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনকে উদ্ধৃত করে ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, হামলাকারী বন্দুকধারী ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে প্যারিস হামলার প্রধান সন্দেহভাজন সালাহ আবদেস্লামের মুক্তি দাবি করছিল।

২০১৫ সালে প্যারিসে ঐ হামলা ১৩০ জন নিহত হয়।

পুলিশ তার সাথে আলোচনার মাধ্যমে কিছু জিম্মিকে ছাড়িয়ে আনতে সক্ষম হলেও জিম্মিকারী একজন মহিলাকে মানব ঢাল হিসেবে আটকে রাখেন।

এসময় লে. কর্নেল আর্নো বেলট্রম ঐ নারীর জায়গায় নিজেকে জিম্মিকারীর হাতে সঁপে দেন।

টা করার সময় তিনি তার নিজের মোবাইল ফোনটি চালু অবস্থায় টেবিলের ওপর রেখে দেন।

পুলিশ বাইরে থেকে ঐ ভবনের ভেতরে কথা বার্তা শুনতে পান।

এরপর হঠাৎ করে ফোনে গুলির শব্দ শোনা গেলে ফরাসি কমান্ডোরা ভেতর ডুকে পড়ে এবং রেদোয়ান লাখদিমকে হত্যা করে।

কিন্তু গোলাগুলির সময় লে. কর্নেল আর্নো বেলট্রম গুরুতরভাবে আহত হন।

পরে শনিবার সকালে হাসপাতাল থেকে তার মৃত্যুর ঘোষণা করা হয়।

বিবিসি বাংলা