ফোরজি ব্যবহারে ভারত–পাকিস্তানের পেছনে বাংলাদেশ

দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ এখন মুঠোফোন ব্যবহার করেন। তবে তাঁদের বেশির ভাগই এখনো ফিচার ফোনে রয়ে গেছেন। আবার দ্রুতগতির চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট (ফোরজি) সেবার ব্যবহারকারীও তুলনামূলক কম।

এ চিত্র উঠে এসেছে মুঠোফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএর ‘মোবাইল ইকোনমি ২০২০ : এশিয়া-প্যাসিফিক’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে। এতে বাংলাদেশসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিযোগাযোগ খাতের পরিস্থিতি উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, আঞ্চলিকভাবে ফোরজি ব্যবহারে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। জিএসএমের হিসাবে, ২০১৯ সালে দেশে মোট মুঠোফোন গ্রাহকের ১০ শতাংশ ফোরজি ব্যবহার করেছে। ৪০ শতাংশ করেছে তৃতীয় প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা বা থ্রিজি ব্যবহার। বাকিরা ছিল পুরোনো টুজি প্রযুক্তিতে।

আলোচ্য সময়ে ভারতে ৫৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৫৫, পাকিস্তানে ২৬ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৬৯, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৮২ ও জাপানে ৮৮ শতাংশ গ্রাহক ফোরজি ব্যবহার করেছে।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ফোরজি সেবা চালু হয়। সরকার আগামী বছর উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা ফাইভজি চালুর পরিকল্পনা করছে। তবে জিএসএমের প্রাক্কলন বলছে, ২০২৫ সাল নাগাদ দেশের ৬ শতাংশ গ্রাহক ফাইভজি সেবার আওতায় আসবে। তখন ফোরজি গ্রাহক দাঁড়াবে মোট গ্রাহকের ৪৬ শতাংশে। বাকি ৩০ শতাংশ থ্রিজি ও ১৮ শতাংশ টুজিতে থাকবে।

দেশে ফোরজি গ্রাহক এত কম কেন জানতে চাইলে রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ২০১৮ সালে দেশে ফোরজি সেবা চালুর পরে মোবাইল অপারেটররা এখন পর্যন্ত দেশের ৮০ শতাংশ এলাকা ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে ফোরজি গ্রাহক ততটা বেশি নয়, এর প্রধান কারণ হলো ফোরজি ব্যবহার উপযোগী মুঠোফোনের স্বল্পতা। তিনি বলেন, আরও বেশি গ্রাহককে ফোরজি সেবায় আনতে হলে মুঠোফোনের দাম কমাতে হবে।

জিএসএমের হিসাবে, দেশের মুঠোফোন ব্যবহারকারীর ৪০ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করে। ২০২৫ সালে দেশের মুঠোফোন ব্যবহারকারীর ৬৯ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী দাঁড়াবে। অবশ্য স্মার্টফোন মানেই ফোরজি ব্যবহার উপযোগী নয়।
জিএসএমের হিসাবে, মোট জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশের হাতে মুঠোফোন রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫৬ লাখ। আর দেশে মুঠোফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৯৪ লাখ। এটি মূলত ‘ইউনিক ইউজার’, যার মানে হলো, এক ব্যক্তির একাধিক সিম (গ্রাহক শনাক্তকরণ নম্বর) থাকলেও তাঁকে একজন গ্রাহক হিসেবেই ধরা হয়েছে।

জিএসএমের হিসাবে, মোট ‘ইউনিক ইউজারের’ ২৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সংখ্যার হিসাবে যা প্রায় ২ কোটি ২৪ লাখে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে, মে মাস শেষে দেশে মুঠোফোন গ্রাহক দাঁড়িয়েছে (সিম সংখ্যা) ১৬ কোটি ১৫ লাখ। আর মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটি ৪০ লাখ। অবশ্য এ ক্ষেত্রে ৯০ দিনের মধ্যে একবার কথা বলা ও খুদে বার্তা পাঠানো বা ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই তাঁকে একজন গ্রাহক হিসেবে ধরা হয়েছে।

প্রথম আলো