ফেসবুকে আজব শখের গ্রুপ ‘Buses & Coaches’

সিল্কসিনিউজ : ছোটবেলা থেকেই যন্ত্রযানের প্রতি বিশেষ আগ্রহ থাকায় সাইফুল্লাহ্ শিমুল পেশায় প্রকৌশলী হয়েও যুক্ত আছেন একটি অন্যরকম গ্রুপের সাথে। এই অন্যরকম গ্রুপের কাজ গুলো বেশ মজার। নতুন নতুন বাসের প্রযুক্তি, সেবা, রং এবং বাসগুলোর খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করাই হল এই গ্রুপের সখ।

আমরা সাধারণত চলার প্রয়োজনে যেকোন বাসেই উঠে পড়ি কিংবা বাস কোম্পানির সেবার মান বিচার করি। এই তো এতটুকুই।

কিন্তু আমাদের দেশ যে এই সেক্টরেও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাচ্ছে- তা বাসেস অ্যান্ড কোচেস গ্রুপের সদস্যরাই ভালো জানেন। এমনকি নতুন বাসের ডিজাইন রং ইত্যাদি বিষয়ে যদি কোন পরামর্শ থাকে তাহলে তা র্নিদ্বিধায় বাস মালিকদের জানিয়ে দেন। পরামর্শ পছন্দ হলে মালিকরা তা সাদরে গ্রহন করেন। বাস গুলো রাস্তায় ছাড়া হলে এই গ্রুপের সদস্যরা ভ্রমন করেন এবং দেখেন বাসের সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা। এক কথায় সদ্যস্যদেরকে ট্রাভেলারও বলা চলে। তবে, এই গ্রুপের সদস্যদেরকে “বাস-গীক” বলা হয়।

কথাগুলো বলছিলেন মানজুম, আতিক, অমি, মিতুল সাম্মি এবং নাঈমরা। তারা এই গ্রুপের সদস্য। তারা বাসের মালিক, বাস ইমপোর্টার, ড্রাইভার এবং পরিবহন শ্রমিকদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখেন। তাদের সাথে বাসের বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিষয়ে জ্ঞান আদান-প্রদান এবং পরামর্শ করেন।  তাছাড়া, তাদের মাঝে ট্র্যাফিক আইন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে থাকেন।

বাসেস এন্ড কোচেস গ্রুপের সদস্যরা সারা বাংলাদেশ এমন কি ভারত, আমেরিকাসহ আরও কিছু দেশে অবস্থান করছেন। এই গ্রুপের সদস্যরা অনেকেই স্টুডেন্ট, অনেকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি  প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, উকিল, ডাক্তার, কেউ বা প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী। সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে এই গ্রুপের সদস্যরা। তারা বিভিন্নভাবে বাসের ছবি তোলেন, বাসের বডি বানানোর বিভিন্ন ওয়ার্কশপের  খবর রাখেন।

কখন, কবে কোন ওয়ার্কশপ থেকে কোন কোম্পানির নতুন বাস রাস্তায় নামবে, এসমস্থ সকল খবর তারা রাখেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা গ্রুপের সদস্যরা এখানে বিভিন্ন সময়ের বাস দুর্ঘটনা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রোডের অবস্থাগুলো আপডেট করেন। এসব অন্য সদস্যদেরও কাজে লাগে। সাধারণ মানুষও এসব তথ্য পেয়ে উপকার পায়।

অনেক সময় বাস মালিক পক্ষও জানেন না নতুন কি কি বাস দেশে আসছে। বাসেস এন্ড কোচেস গ্রুপের সদস্যরা এসময় তাঁদেরকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করে থাকেন।

এছাড়াও কোথায় কিভাবে যেতে হবে, কোন পথে যেতে হবে, সময় ঠিক আনুমানিক কতক্ষণ লাগবে, খরচ কেমন পড়বে, আরামদায়ক জার্নি কোন সার্ভিসটি দেবে এসব তথ্য এই গ্রুপের সকল সদস্যদের  কাছে থাকে।

এই গ্রুপের বিশেষ কাজ গুলোর মধ্যে রয়েছে বাস-গীকিং (বিভিন্নভাবে বাসের ছবি তোলা), ট্রাভেলিং, ওয়ার্কসপ ভিজিট, বাস মালিকদের সাথে পরামর্শ হিসেবে বাসের সিট প্লান, কালার আইডিয়া, ইন্টেরিয়র ডিজাইন ইত্যাদি।

বর্তমানে বাসেস অ্যান্ড কোচেস গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৩২ হাজারেরও বেশি। যে কেউ চাইলে এই গ্রুপে জয়েন করতে পারবেন, আবার অন্যদেরকে এই গ্রুপে জয়েন করাতে পারেন।

 

স/আ