ফের সক্রিয় হচ্ছে জাবির উপাচার্য বিরোধী জোট

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকরা। তবে আশার আলো না দেখায় ঝিমিয়ে পড়েছিলো আন্দোলন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের মহাপরিকল্পনাকে ঘিরে ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চ’র আন্দোলন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলে উপাচার্য বিরোধী জোটের ফের সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

রবিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চ’র সংবাদ সম্মেলনে একাত্মতা পোষণ করেন উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের জোট ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য শেষে উপাচার্য বিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খবির উদ্দিন এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন। পরে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের পক্ষে অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম একাত্মতা পোষণ করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হওলাদার, অধ্যাপক তারেক রেজা, সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ এবং বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে- শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন।

এছাড়াও উপাচার্য বিরোধী জোটের অন্তত ১৪জন শিক্ষক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা স্বোচ্চার। যথাযথ উন্নয়নের লক্ষ্যেই আমরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছি। এর বাইরে আপাতত আমাদের দলের কোন ভাবনা নেই।’

এ বিষয়ে সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের সদস্য অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা সব সময়ই তৎপর। তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছি। আলাদা ভাবে জোটের কোন কর্মসূচি নেই। তবে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।’

এদিকে উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের একাত্মতা পোষণ করাকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের মাধ্যম বলে মনে করছেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। এবিষয়ে উপাচার্যপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, ‘অবস্থান ছোট হয়ে গেলে সব সংগঠনই একাত্মতা পোষণ করার সুযোগ খোঁজে। যেহেতু আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে তারা সরাসরি এই প্রকল্পের বিরোধীতা করতে পারছে না। তাই তারা একাত্মতা পোষণ করেছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে আওয়ামীপন্থীদের একাংশ, বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’। শুরু থেকেই তারা বিভিন্ন ইস্যুতে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন করেছেন। আন্দোলনকারী আওয়ামী গ্রুপের শীর্ষ কয়েক নেতা ও তাদের অনুসারী নিয়ে ভিসির সাথে একত্রিত হন। এতে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের গতি হারিয়ে ফেলে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’। ফলে কয়েক মাস উপাচার্য বিরোধী জোটের তেমন কোন কর্মসূচিও লক্ষ্য করা যায়নি।