ফের বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঢাকা শহরকে গুছিয়ে সাজাতে ও বাসিন্দাদের সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের প্রত্যাশা নিয়ে যখন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত মেয়রপ্রার্থীরা, তখন জানা গেল– ফের বায়ুদূষণে শীর্ষে উঠেছে ঢাকা।

বায়ু মান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়ালের প্রতিবেদনে প্রকাশ, গতকাল রোববার ঢাকার বাতাস হতে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা।

উল্লেখ্য, এয়ার ভিজ্যুয়াল প্রতিষ্ঠানটি ২৪ ঘণ্টা ধরে বিশ্বের ৯৫টি বড় শহরের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

এর আগে ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য সবসময় দায়ী করা হতো শহরের আশপাশে গড়ে ওঠা ইটের ভাটাগুলোকে।

সে জন্য ঢাকা ও এর আশপাশের পাঁচ জেলায় ৬২ শতাংশের বেশি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদফতর।

কিন্তু এর পরও ঢাকা শহরের বায়ু মানের উন্নতি তো হয়নি; বরং দূষণের শীর্ষে উঠেছে।

এ ব্যাপারে বায়ুদূষণবিষয়ক গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুস সালাম বলছেন, এটি ঠিক যে ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ইটভাটা। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বায়ুদূষণের চিত্র অনেকটা পাল্টেছে।

তিনি বলেন, শুধু ইটভাটার ধোঁয়া নয়; ঢাকায় অবকাঠামো নির্মাণকাজের ধুলা ও যানবাহনের ধোঁয়াও এখন দূষণে বহুলাংশে প্রভাব ফেলছে।

এ ছাড়া শীতকালীন ভারত, নেপালের বায়ু ও কুয়াশা বাংলাদেশে প্রবেশ করে এ দূষণ ত্বরান্বিত করছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে আসা ভারত ও নেপালের বাতাসে দূষণকারী সূক্ষ্ম বস্তুকণা থাকছে। সেগুলো ঢাকাসহ দেশের বেশির

ভাগ এলাকার বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস হয়ে উঠছে।

তাই বায়ুদূষণ আর কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশের বিষয় হিসেবে থাকছে না বলে মত দেন এই অধ্যাপক।

তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও উদ্যোগে এখন ঢাকা, দিল্লির মতো শহরের বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

পরিবেশ অধিদফরের গবেষণায় প্রকাশ, ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটার ধোঁয়া ৫৮ শতাংশ দায়ী। বাকি ৪২ শতাংশের জন্য দায়ী নির্মাণ ও মেরামতকাজের সঙ্গে আসা ধুলা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন থেকে বের হওয়া ধোঁয়া।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের মতে, বায়ুদূষণ ক্ষেতে আমরা শুধু ঢাকাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। কিন্তু এ দূষণের কবলে এখন দেশের অন্য বড় শহরে ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি যোগ করেন, সরকারের উচিত পরিবেশ অধিদফতরসহ স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সব কটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা।