সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
তিন মাস পর ঢাকা ফিরে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে গলানোর ইচ্ছে নেই বলে জানালেও মীর কাসেম আলীর ফাঁসির পর ঠিকই প্রতিক্রিয়া এসেছে তাদের।
রোববার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রাণলয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা জেনে দুঃখিত যে, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং প্রধান অর্থদাতা মীর কাসেম আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বাংলাদেশ।
এ প্রক্রিয়ায় ‘অতীতের ক্ষত নিবারণ হয় না’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে এতে।
একাত্তরের এই মানবতাবিরোধী অপরাধীর শাস্তিকে ‘ভুল চর্চা’ দাবি করে তুরস্ক বলছে, তা বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতীম জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরি করবে না বলে তারা আশা করছে।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের ফাঁসি কার্যকর ঠেকাতে গত তিন বছরে বার বার বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়েপ এরদোয়ান।
সর্বশেষ গত মে মাসে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর ঢাকায় তাদের রাষ্ট্রদূতকে তুরস্ক ডেকে পাঠালে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়।
নিজামীর ফাঁসির নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে এরদোয়ান বলেন, মৃত্যুদণ্ড হওয়ার মতো ‘পার্থিব কোনো পাপ’ নিজামীর নেই বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে গণহত্যায় অংশ নেওয়া আল বদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী। তার পরিকল্পনায়ই একাত্তরে বিজয়ের দুদিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যা হয় বলে আদালতে প্রমাণ হয়।এরপর গত ১৫ জুলাই তুরস্কে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের প্রায় মাসখানেক পর ঢাকায় ফেরেন রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ক।
গত ১৬ অগাস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কোনো অভিপ্রায় তার দেশের নেই।
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতায় তুরস্ক সরকারের অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা ভুল বোঝাবুঝি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো অভিপ্রায় আমাদের নেই।”
সংবাদ সম্মেলনে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নিন্দা জানান রাষ্ট্রদূত।
এরদোয়ান সরকারকে উৎখাত চেষ্টার সময় তুরস্কের গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।
সূত্র: বিডি নিউজ