ফুল-কাপড় ভাসিয়ে বৈসু শুরু, আজ থেকে সাংগ্রাই

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবিতে দুলছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। প্রাণোচ্ছল পাহাড়িদের উচ্ছ্বাস আর উৎসবের আমেজ চলছে সবখানে। গতকাল শনিবার খাগড়াছড়ির চেঙ্গী, মাইনী আর ফেনী নদী এবং বিভিন্ন ছড়া-খালে ফুল ও কাপড় ভাসিয়ে দিয়ে ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’ উৎসব শুরু হয়েছে।

এ সময় গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে পূজা-অর্চনা করা হয়। বিপুলসংখ্যক ত্রিপুরা কিশোরী ও নারী নদীতে জড়ো হয়ে ফুল ও কাপড় ভাসানোর আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। এ সময় শরণার্থীবিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির স্ত্রী মল্লিকা ত্রিপুরাও ছিলেন।

উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত জেলা সদরের দেবতা পুকুরে হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল গতকাল। যা ত্রিপুরাদের কাছে মাতাই পুকুরি নামে পরিচিত। সেখানে ঐতিহ্যগতভাবে মেলা বসে। ত্রিপুরাদের কাছে এটি তীর্থস্থান। তারা দুর্গম দেবতা পুকুরে পশু মানস করে নানা পূজা-অর্চনা করেছে। বৈসুকে কেন্দ্র করে পাড়া-গ্রামে গরয়া নৃত্য চলছে। বৈসু শুরুর কয়েক দিন আগে থেকেই সাধারণত গরয়া নৃত্যের দল ঘুরে বেড়ায় পাহাড় থেকে পাহাড়ে।

গতকাল চাকমারা ‘মূল বিজু’ পালন করেছে। এ দিন ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘পাজন’ রান্নাবান্না আর অতিথি আপ্যায়নে ব্যস্ত ছিল তারা। আজই গয্যাপয্যার মধ্য দিয়ে চাকমাদের তিন দিনের বিজু উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

এদিকে আজ থেকে শুরু হবে মারমা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব। এ উপলক্ষে শহরের পানখাইয়াপাড়ায় মারমা উন্নয়ন সংসদের উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা চলছে। উৎসবের কর্মসূচির মধ্যে আছে বর্ণিল শোভাযাত্রা, জলকেলি (পানি উৎসব) ও উন্মুক্ত কনসার্ট। শরণার্থীবিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি সাংগ্রাই উৎসব কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। এদিকে ‘সাংগ্রাই’ উৎসব উপলক্ষে গতকাল শনিবার বিকেলে গুইমারা রামছুবাজার এলাকায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে অংশ নেন মঙ্গল শোভাযাত্রায় গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম সাজেজুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, ১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল রুবায়েত মাহমুদ হাসিব প্রমুখ।