ফিলিপাইনে টাইফুনের আঘাত, এখন পর্যন্ত মৃত ১১২

এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন আঘাত হেনেছে ফিলিপাইনে। একটি দ্বীপ প্রদেশে কমপক্ষে ৬৩ জন নিহত হওয়ার পর মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।

বোহোল প্রদেশের গভর্নর আর্থার ইয়াপ এই মৃত্যুর সংখ্যা জানান। যদিও তিনি টাইফুন রাইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধেক পরিমাণ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন এবং সেসব শহরের মৃত্যুর সংখ্যা জানিয়েছেন। বাকি অর্ধেক শহর এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত টাইফুনে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১১২ বলে জানা গেছে। ইয়াপ বলেন, আরো ১০ জন নিখোঁজ এবং ১৩ জন আহত হয়েছে। ৪৮ জন মেয়রের মধ্যে মাত্র ৩৩ জন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ কারণে মৃতের সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেতে পারে।

কর্মকর্তারা ভূমিধস ও ব্যাপক বন্যার কারণে আরো মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।

একটি ফেসবুকে পোস্টে ইয়াপ লেখেন, ১২ লাখের বেশি লোকের প্রদেশের মেয়রদের তাদের জরুরি পরিষেবার আহ্বান জানানো হয়। পানীয় জলের সঙ্গে অনেক মানুষের খাবার সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানানো হয়। বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে পানির পাম্পগুলো অকেজো হওয়ায় বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলেও লেখেন তিনি। টাইফুনবিধ্বস্ত শহরগুলোর একটি সমীক্ষায় যোগদানের পর ইয়াপ বলেন, এটি খুব স্পষ্ট যে বোহোলের ক্ষয়ক্ষতি সর্বব্যাপী।

এদিকে সরকার বলছে, টাইফুনে প্রায় সাত লাখ ৮০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুলিশ কমপক্ষে ৩৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। টাইফুন দ্বারা প্রথম আঘাতপ্রাপ্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর মধ্যে একটি ডিনাগাট দ্বীপপুঞ্জের কর্মকর্তারা পৃথকভাবে কয়েকটি শহর থেকে ১০ জন মারা যাওয়ার কথা জানান।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে শনিবার দুর্গত অঞ্চলে উড়ে যান এবং টাইফুন আক্রান্তদের দুই বিলিয়ন পেসো বা ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড সাহায্যের ঘোষণা দেন। জানা গেছে, তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতাগ্রস্ত বোহোল পরিদর্শন করবেন আজ।

সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুনটি ঘণ্টায় ১২১ মাইল বেগে আঘাত হানে। এতে ঝোড়ো বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬৮ মাইল। প্রশান্ত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরের মধ্যে অবস্থিত বিপর্যয়প্রবণ দ্বীপপুঞ্জে আঘাত করার জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটিই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী।

অন্তত ২২৭টি শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে মাত্র ২১টি শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরাস্থাপিত হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি এখনো বন্ধ রয়েছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ