ফিফার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে না ইন্দোনেশিয়া: প্রেসিডেন্ট উইদোদো

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলের মালাং শহরে ফুটবল খেলায় জয়-পরাজয়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ ও পদদলিত হয়ে ১৭৪ জন নিহত হন গত ১ অক্টোবর। তাদের মধ্যে ১৭ জন শিশুও রয়েছে। এ ঘটনার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো ‍উইদোদো জানালেন, আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থার (ফিফা) নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে না ইন্দোনেশিয়া।

দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো জানিয়েছেন, ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো তাকে একটি চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন। এতে তিনি ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি সংস্থাটির সঙ্গে সমন্বয়ের কথাও তুলে ধরেন। আগামী বছর এই আয়োজনে অংশ নেবে পাঁচ মহাদেশের ২৪টি দেশ।

জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর চিঠির সূত্র ধরে প্রেসিডেন্ট উইদোদো আরো বলেছেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফিফা নিষিদ্ধ করছে না। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ’। গত শুক্রবার (৭ অক্টোবর) তার কার্যালয়ের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিরাপত্তা প্রোটোকলের আওতায় ফিফা স্টেডিয়ামগুলোতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার না করার এবং খেলা চলার সময় বের হওয়ার গেট খোলা রাখার পরামর্শ দেয়। যদিও এই নিয়মগুলো নিরাপত্তার মান হিসাবে বিবেচিত হয়, যেগুলো ঘরোয়া বা জাতীয় লীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাছাড়া স্থানীয় সরকার এবং পুলিশ কীভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করবে তার ওপর ফিফার কোনো কর্তৃত্ব নেই।

প্রেসিডেন্ট উইদোদো গত বুধবার মালাং শহরের ওই স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন এবং বলেন ঘটনার দিন বেশ কয়েকটি গেট তালাবদ্ধ ছিল।

বৃহস্পতিবার দেশটির জাতীয় পুলিশ প্রধান বলেন, স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের একটি সঠিক অপারেটিং সার্টিফিকেট নেই এবং তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হবে।

আগামী বছরের অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার অধিকার অর্জন করায় ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলের উন্নয়নে একটি বড় মাইলফলক হতে পারে। একটি সফল টুর্নামেন্ট দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলোর সমাধান এনে দেবে এমন প্রত্যাশা দেশটির ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের। কিন্তু এবারের বিপর্যয় এক ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে যে ইন্দোনেশিয়া খেলার আয়োজনের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ।

গত সপ্তাহে ঘরোয়া লীগের আয়োজন স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। ঘটনা তদন্তে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট উইদোদো। তিনি প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন যে ফুটবল খেলার আয়োজনকে স্বার্থক করে তুলতে তিনি নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন।

জানা গেছে, শহরের কানজুরুহান স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল গত ১ অক্টোবর। আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া সুরাবায়া নামের দুটি ফুটবল ক্লাবের মধ্যে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় আরেমাকে ৩-২ গোলে হারায় পেরসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে পেরসেবায়ার কাছে এই প্রথম কোনো ম্যাচে হারলো আরেমা। কিন্তু হার মানতে নারাজ তারা। এক পর্যায় মাঠে নেমে সমর্থকরা হট্টগোল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে চড়াও হয় পুলিশ।

দেশটির পুলিশ জানায়, স্টেডিয়ামে থাকা আরেমার দর্শকরা মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। তাদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এতে দর্শকরা আতঙ্কিত হয়ে হুড়াহুড়ি করে দৌড়াতে থাকে। এ সময় পদদলিত হয়ে নিহত হন অনেকে। এ ঘটনাকে দাঙ্গা বলে উল্লেখ করে তারা।

 

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ