ফায়ারের তিন ডুবরি দিয়ে চলছে রাজশাহী বিভাগের উদ্ধার কাজ

সিল্কসটিনিউজ ডেস্ক:

রাজশাহী বিভাগে দুইকোটি মানুষের জলপথে দুর্ঘটনার উদ্ধারকাজে ডুবুরি আছে মাত্র তিন জন। এই তিনজন ডুবরি নিয়ে জলপথ দুর্ঘটনায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের। অনেক সময় একই দিনে বেশ কয়েক জায়গায় ডাক পড়লে, সেবা দিতে ব্যর্থ হয়ে পড়ে ডুবুরিরা। একটি কাজ শেষ না করতেই আরেকটি কাজে দৌঁড়াতে হয়। আবার সরঞ্জামাদি পর্যাপ্ত না থাকায় কাজেও প্রচুর সময় লাগে। এইজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিভাগের প্রতিটি জেলায় ডুবুরি নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের আটটি জেলার জন্য ডুবুরি আছে মাত্র তিনজন। এর ফলে তীব্র জনবল সংকটে পড়তে হচ্ছে তাদের। অথচ প্রতিনিয়তই ঘটছে জলপথের দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বর্ষাকাল এলে এ দুর্ঘটনা প্রকট আকার ধারণ করে। তখন একইদিনে বেশ কয়েক জায়গায় জলপথে দুর্ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া যায়।

এছাড়া বৃহত্তর রাজশাহীতে ছোট ছোট নদীপথ, জলাধার ও খালবিলের অভাব নেই। অভাব নেই বড় বড় নদীরও। সেইসব স্থানেও প্রতিনিয়ত ঘটে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে পদ্মা নদীতে প্রতিবছর দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। এছাড়া বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে নদীপথে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন, মাছ শিকার, বালি উত্তোলন, পারাপারসহ বিভিন্ন স্থানে নৌ-ভ্রমণ স্পট তৈরি হওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও। অথচ সে অনুযায়ী জলপথে দুর্ঘটনায় উদ্ধারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর দফতরের দেয়া তথ্যমতে, গত দেড় বছরে এ অঞ্চলের নদী বা জলাশয়ে পরিচালিত হয়েছে প্রায় দুইশটি ডুবুরি অভিযান। এতে উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫টি মৃতদেহ। গতবছর মে মাসে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পদ্মার পানিতে ডুবে মারা যায় পাঁচ জন। নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন পর তাদের উদ্ধার করে ডুবুরি দল।

তিনজন ডুবুরি নিয়ে এ দলটিকে দুর্ঘটনার সময় ছুটতে হয় বিভাগের ৮টি জেলায়। পদ্মাপাড়ের মানুষরা বলছেন, নৌকা পারাপারের সময় কিংবা ট্রলারে করে পারাপারের সময় এক একটা ট্রলারে ৬০ জন পর্যন্ত মানুষ ওঠেন। কোনো যানবাহনে তারও অধিক লোকজন ওঠে।

রাজশাহী সদরের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি টিমের লিডার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যার স্বজনরা পানিতে ডুবে যান তারা চান দ্রুত সেবা পেতে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে তা সম্ভব হয় না। এইজন্য অনেক সময় কাজ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের রোষানলে পড়তে হয়।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ডুবুরির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর বারবার সুপারিশ করা হয়েছে। এখনো চিঠি চালাচালি চলছে। কিন্তু কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ এত অল্প ডুবুরি নিয়ে সঠিকভাবে সেবা দেয়া সম্ভব হয় না। বিশেষ করে বর্ষাকালে একইদিনে দুই-তিনটি জায়গা থেকে ডাক আসে, তখন পেরে ওঠা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এক জায়গার কাজ শেষ না করতেই আরেক জায়গা ছুটতে হয়। এইজন্য প্রতিটি জেলায় ডুবুরি নিয়োগ দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।