রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন বুধবার প্লেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। তার এ মৃত্যুর পেছনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
মাত্র দুই মাস আগে গত ২৩ জুন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নিজের ২৫ হাজার সেনা নিয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন প্রিগোজিন। আর এই বিদ্রোহই তার মৃত্যু ডেকে এনেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার (আইএসডব্লিউ) রুশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) জানিয়েছে, বিদ্রোহ সংঘটিত এবং রুশ বিমান বাহিনীর কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পরও— প্রিগোজিনের বিশ্বাস ছিল পুতিন তাকে ক্ষমা করে দেবেন।
কিন্তু এই বিদ্রোহ যে পুতিনকে ব্যক্তিগতভাবে কতটা বেকায়দায় ফেলেছিল সেটি হয়ত বুঝতে পারেননি প্রিগোজিন অথবা বিষয়টিকে তেমন আমলে নেননি তিনি।
বিদ্রোহ করে প্রিগোজিন রাজধানী মস্কোতে যেতে চেয়েছিলেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাপ্রধানসহ অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছিলেন।
মার্কিন এ সংস্থাটি জানিয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে প্রিগোজিনের ওপর পুতিন যে বিশ্বাস রেখেছিলেন সেটিকেও তিনি অবজ্ঞা করেছিলেন। যারা পুতিনের প্রতি আনুগত্য দেখান, তাদের তিনি খুবই মূল্যায়ন করেন এবং মাঝে মাঝে পুরস্কৃতও করে থাকেন। এমনকি তারা ব্যর্থ হলেও তিনি তাদের পুরস্কার দিয়ে থাকেন।
যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘প্রিগোজিনের বিদ্রোহ ছিল খুবই বড় ধরনের অবাধ্যতা যদিও তিনি দাবি করেছিলেন তিনি রাশিয়ার ভালোর জন্য বিদ্রোহ করেছিলেন।’
এদিকে বুধবার মস্কোর অদূরে প্রিগোজিনসহ মোট ১০ জনকে বহনকারী একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়। এতে সবাই মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর দুই মাস আগে ইউক্রেনের যুদ্ধের ময়দান থেকে নিজের সেনাদের নিয়ে রাশিয়ায় আসেন তিনি। এরপর শুরু করেন বিদ্রোহ। এদিন রোস্তভ-দি-অন প্রদেশে অবস্থিত সাউদার্ন মিলিটারি কমান্ডের হেডকোয়ার্টার দখল করেন তিনি। এই হেডকোয়ার্টার থেকেই ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন রাশিয়ার জেনারেলরা।