প্রাপ্তিতে লুকিয়ে বাড়তি চ্যালেঞ্জ

নিউজিল্যান্ড সফর থেকে এই প্রথম একটি টেস্ট জয় দিয়ে প্রাপ্তির পাল্লা ভারী করে ফিরছে বাংলাদেশ। অবশ্য এই প্রাপ্তি যে বাড়তি চ্যালেঞ্জও আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে আসছে, সিরিজ শেষ হওয়া মাত্রই সেটি আগাম টের পেতে শুরু করে দিয়েছেন মমিনুল হক। বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের মতে, এখন থেকে দেশের বাইরে খেলতে যাওয়াটা আগের যেকোনো সময়ের চেয়েই কঠিন হয়ে উঠবে। কারণ প্রতিপক্ষ সজাগ-সতর্ক থাকবে আরো বেশি।

এমন নয় যে আগে সেই সতর্কতা থাকত না। তবে বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের ভালো খেলতে না পারার দুর্নাম থাকায় প্রতিপক্ষের মধ্যে কিছুটা গা-ছাড়া মনোভাবও নিশ্চয়ই কখনো কখনো লক্ষ করেছেন মমিনুল। এখন থেকে সেই অসতর্কতা আর থাকবে না বলেই বিশ্বাস তাঁর। বাংলাদেশকে দেখার নতুন চোখ তাঁর দল খুলে দিয়েছে বলেই সামনের আরো কঠিন পথও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে টেস্ট অধিনায়কের কাছে। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর তিনি বলছিলেন সে কথাই, ‘আমার মনে হয়, আমাদের দলের জন্য আরো অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কারণ (এর আগে) আমরা যখনই বাইরে খেলতে যেতাম, ওরা (প্রতিপক্ষ) ধরেই নিত যে আমরা বিদেশে খুব একটা ভালো খেলতে পারি না। এভাবেই (এত দিন) চিন্তা করা হতো। এখন সবার মধ্যে সচেতনতা চলে আসবে।’

সচেতনতা থেকে প্রতিপক্ষের সতর্কতাও তুঙ্গে থাকবে বলে বিশ্বাস মমিনুলের, ‘সামনেই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ (মার্চ-এপ্রিলে) আছে। শ্রীলঙ্কা সিরিজ আছে, এরপর আবার খেলা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজেও। সবাই আরো বেশি সতর্ক হবে। আমার মনে হয়, আমাদের জন্য আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে বিষয়টি। সেই চ্যালেঞ্জটিও আমাদের নিতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের প্রক্রিয়াও ধরে রাখতে হবে।’ আপাতত মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারার আনন্দও ঘোষিত হলো টেস্ট অধিনায়কের কণ্ঠে, ‘আমাদের টেস্ট দল নিয়ে তো কাজ করার অনেক কিছুই বাকি আছে। তবে আপনারা জানেন, আমি খুব কঠিন সময়ে নেতৃত্ব পেয়েছিলাম। তখন থেকেই আমি স্বপ্ন দেখতাম বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার। কিন্তু মানুষ তখনই কোনো কিছু বিশ্বাস করে, যখন আপনি তা করে দেখান। আমাদের বিশ্বাস করার জন্য এ রকম একটি ফল সত্যিই খুব দরকার ছিল। এখন থেকে অন্তত সবাই বিশ্বাস করবে যে আমরাও পারি (বিদেশে গিয়ে জিততে)।’

টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে মাত্রই একটি জয় ধরা দিল। এর ধারাবাহিকতা রেখে আরো সুদূরেও এখন চোখ মমিনুলের, ‘এখন সবাই বিশ্বাস করতে পারছি, আমাদেরও সামর্থ্য আছে। বিদেশে গিয়েও টেস্ট ম্যাচ জেতা যায়। এখন একটি টেস্ট জিতলাম, পরে আরেকটি টেস্ট জিতব, এভাবেই একসময় আমরা সিরিজও জিতব। নিজেদের ভেতরে এই বিশ্বাসটি আনাও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম টেস্ট জেতাতে মনে হয় সেই বিশ্বাস সবার ভেতরেই এসেছে।’ হ্যাগলি ওভালে হারের মধ্যেও যেভাবে ব্যাটিং সৌন্দর্যে ঝিলিক দিয়ে উঠেছেন লিটন কুমার দাস, তাতে তাঁর জন্যও স্তুতিবাক্যের ফোয়ারা বইয়ে দিতে হলো মমিনুলকে, ‘টেকনিক্যালি দারুণ ব্যাটার লিটন। ওর ব্যাটিং দেখলে মনে হয়, (বল খেলার জন্য) অনেক বেশি সময় পায় সে, যা বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের মতোই।’

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ