প্রবাসে ‌জাতীয় পরিচয়পত্র: মার্চেই সম্ভাব্যতা যাচাই

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বিদেশে দূতাবাস কিংবা মিশনের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিতে কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আসন্ন মার্চেই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সিঙ্গাপুর পাঠাচ্ছে সংস্থাটি।

কমিশনের একাধিক সূত্র বলছে, তিন সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। অন্য দুই সদস্য হলেন-জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক মো. আব্দুল বাতেন ও সিস্টেম অ্যানালিস্ট ফারজানা আক্তার।

সিঙ্গাপুরে কোন প্রক্রিয়ায় প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়া যায়, সাতদিনের (৩মার্চ থেকে ৯মার্চ) ওই ভ্রমণে মূলত সেটাই তারা দেখবেন। এই প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই প্রবাসে ভোটার করে, সেখানে এনআইডি সরবরাহের ব্যবস্থা করবে নির্বাচন কমিশন।

ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেসব দেশে বাংলাদেশের বেশি সংখ্যক নাগরিক রয়েছেন, প্রথমে সেসব দেশেই কার্যকম চলবে। এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সাতটি স্থায়ী কেন্দ্রও গড়ে তুলছে চাইছে নির্বাচন কমিশন। প্রবাসী নাগরিক রয়েছে এমন সব দেশেই পরবর্তীতে স্থায়ী কেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও ভাবা হচ্ছে। এজন্য আলাদা একটি প্রকল্পও হাতে নিচ্ছে কমিশন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এজন্য আঞ্চলিক সার্ভার স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।

তিনি বলেন, প্রবাসীরা আমাদের রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করছেন। তাই দেশে এসে যেন কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়, সেজন্য আমরাই তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এটা সফল হলে ভবিষ্যতে বিদেশে বসে ভোটদানের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। তবে সেই সিদ্ধান্ত কমিশনের।

২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। সেই ভোটার তালিকা অনুযায়ী, দেশের নয় কোটি ভোটারকে দেওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। বর্তমানে স্মার্টকার্ডও দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার সরকারও বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন নির্ভর করছে এই পরিচয়পত্রের ওপর। বর্তমানে বাড়ি ভাড়া নিতে গেলেও জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হচ্ছে। তাই দেশে-বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকেরা এই পরিচয়পত্র ছাড়া বলতে গেলে কোনো কাজই এখন করতে পারেন না!

বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে সাড়ে ১০ কোটির মতো। আর বিদেশে রয়েছে বাংলাদেশের প্রায় ২ কোটি নাগরিক। একটি বিরাট সংখ্যক মানুষের সমস্যার সমাধান করতে নির্বাচন কমিশনের এ উদ্যোগটি দীর্ঘদিনের দাবি ছিল প্রবাসীদের।

কেননা, অনেক প্রবাসীই এনআইডি না থাকার কারণে দেশের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমানো টাকা তুলতে পারেন না।

প্রবাসেই ভোটার করা ও এনআইডি সরবরাহের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান বলেন, আমরা আশা করি, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই আমরা কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।

সাফল্য এলে সিঙ্গাপুরের পর অন্যান্য দেশেও এ কার্যক্রম চলবে বলে জানান তিনি।