প্রধানমন্ত্রীর কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। তার কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। নিজেদের নির্দয় দুঃশাসন ও কুৎসিত মাফিয়া শাসনের ঘটনা দেশে-বিদেশে প্রচারকে আড়াল করতেই আজ তড়িঘড়ি করে হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সাতক্ষীরার স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দকে সাজা দেয়া হলো।

আজ বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘গুম-খুন, শেয়ারবাজার লুট, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, পর্দা-বালিশ থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারি কেনাকাটায় সাগরচুরি, নির্মাণকাজে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার, জিপিএ-ফাইভ উলম্ফণ, পরিবেশ দূষণ, মাদকের বিস্তার, ক্যাসিনো বাণিজ্য, বিদ্যুৎখাতের হরিলুটকে ইন্ডেমনিটি দেয়া, বিরোধী দল দমনে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারসহ কতো ক্ষেত্রে যে তারা অপরিসীম ‘কৃতিত্বের’ বিশ্বরেকর্ড একের পর এক গড়ে চলেছে। ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব উৎপাদন ও বিতরণে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীদের মতো পারঙ্গম আর কেউ আছেন কিনা তা আমাদের জানা নেই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মাদারীপুর জেলাধীন শিবচর পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন রফিকুল ইসলাম। যেদিন বিএনপির কার্যালয় থেকে তিনি ধানের শীষের মনোনয়ন নিয়ে এলাকায় ফেরার পথে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার রাত ১২টায় রাজধানীর মিরপুর এলাকায় একটি মাইক্রোবাস তাকে ফেলে রেখে যায়। গতকাল ছিল শিবচর পৌর নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। তিনি যাতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারেন সেজন্যই আওয়ামী দুষ্কৃতিকারীরা তাকে অপহরণ করে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আরো একটি বিষয়ে বিশ্বরেকর্ড করেছে, সেটি হচ্ছে আদালতকে ব্যবহার করে নির্দোষ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সাজা দেয়া। এর শিকার হয়েছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমান এবং বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ দেশের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী। সাজানো ঘটনায় মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশব্যাপী একের পর এক বিএনপির নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে কারাগারে ভরে রাখা হচ্ছে। তার সর্বশেষ শিকার হলেন বিএনপির প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ বিএনপির ৫০ জন নেতাকর্মী।

রিজভী বলেন, উল্লিখিত ঘটনাগুলো আওয়ামী অপশাসনেরই বাইপ্রোডাক্ট। গণতন্ত্র ও নির্বাচনকে শেখ হাসিনা যে জরাগ্রস্ত করেছেন এটি তারই প্রমাণ। ভোটাররা হয়ে পড়েছেন অসহায় ও নিরুপায়। বন্ধ্যা ভোটব্যবস্থায় শেখ হাসিনা আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। আওয়ামী সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গুম ও ক্রসফায়ারে হত্যার যে রেকর্ড গড়েছে তা অন্যান্য দেশের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসককেও বিচলিত করবে। রিমান্ডের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শারীরিকভাবে টর্চার করা আওয়ামী লীগের কালচারে পরিণত হয়েছে। বিএনপিসহ লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলায় সরকার দেশের মধ্যে যে বৃহত্তর কারাগার তৈরি করেছে সেই দেশটির এখন কোনও মানবিক মুখমণ্ডল নেই। বর্তমানে মানবতার অস্তিত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এই পরিস্থিতি সরকারের অসৎ অনাচারের সারাংশ মাত্র। দেশের মানুষ ভয়-ভীতি-আতঙ্কের এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিনযাপন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফৎ আলী সপু ও আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ