প্রত্যেক প্রাণী অন্যের ক্ষতি না করে নিজের মতো জীবনযাপনের সুযোগ পাক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

আপনি কখনো হাসছেন কিন্তু আপনার ভেতর হয়তো প্রচণ্ড কাঁদছে, আবার কখনো হয়তো আপনার কান্না দেখছে কেউ কিন্তু আপনার ভেতর আনন্দের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে! স্থান, কাল, ব্যক্তির নিজ অবস্থান ও পাত্র ভেদে এই যে গভীরতম বিষয় সেটি প্রকৃত অর্থে ব্যক্তি নিজে বুঝতে পারেন আর কখনোবা তাঁর অতি আপন কেউ বুঝতে পারে। এর বাইরে যে যাই বলুক তিনি শুধু তাঁর চোখে দৃশ্যমান অংশের উপর ভিত্তি করে মতামত দেন। যেটি সঠিক হওয়ার এবং না হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় একই!

সম্প্রতি অস্কারের আয়োজনে এক চপেটাঘাতকে ঘিরে চরম বাক্য বিনিময় হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন অভিনেতা আসলে উপভোগ করে হাসছিলেন যেই তিনি তাঁর স্ত্রীর মুখভঙ্গি দেখেছেন, তাতেই তিনি রেগে গিয়ে চড় কাণ্ড ঘটিয়েছেন! এখন অপমানিত হয়েও যে হাসি ধরে রাখা যায় সেটি সেই ঘটনাকালীন উপস্থাপকের মুখভঙ্গি দেখলে অনেকের বাস্তবিক অর্থে বুঝতে সুবিধা হবে। সকল হাসিই তাই হাসি নয় এটি মাথায় রাখা যেতে পারে! হাসির ভেতরেও লুকিয়ে থাকতে পারে অনেক না হাসার গল্প।

সমাজে পথ চলতে যেয়ে তাই একটি বিষয় ব্যক্তিগত জায়গা থেকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি, কোনো বিষয়েই সরাসরি সিদ্ধান্তে চলে আসি না। কোনো একটি ঘটনা ঘটে গেলে তা নিয়ে নিজস্ব মতামত হয়তো তৈরি হয় কিন্তু সেটিই যথার্থ সেই ভাবনা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করি। অসংগতি, অযথার্থতা দূর করবার দায়িত্ব যার বা যাদের সেই পাশ থেকে আওয়াজ এলেই, নিজের অবস্থানগত মতামত নিয়ে কথা বলার চর্চাটুকু গড়ে উঠা উচিত। কোনো বিষয় সম্পূর্ণ পরিস্কার হওয়ার পূর্বে পক্ষ, বিপক্ষে বুলি আওড়ানো আমার কাছে বিচারকের পূর্বে বিচারকার্য সম্পন্ন করে ফেলা মনে হয়।

যেহেতু আমরা বলতে ভালবাসি, সবাইকে শোনাতে ভালবাসি এবং যেহেতু আমাদের কাছে ফেসবুক রয়েছে তাই এই চর্চা থেকেই যাবে বোধ করছি। অন্যায়কে অন্যায় বললে তীব্র ভাল লাগা বোধ কাজ করে। এটিই হওয়া উচিত। সমাজের প্রকৃত নিপীড়িত অংশের প্রত্যেকের প্রতি সহমর্মিতা রাখার চেষ্টা আমাদের থাকা উচিত। সেটি রাখতে গিয়ে আমরা যেন ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে শ্রেণিভুক্ত না করে ফেলি। কোনো একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষণে ক্ষণে ঘটনার বিবরণ নানা আঙ্গিকে আসার অর্থই দাঁড়ায় আমরা স্থিরভাবে ভাবনার জায়গাতে নেই। ব্যক্তির এই আচরণ নেয়া গেলেও দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এরুপ মিশ্র বর্ণনা নিঃসন্দেহে অপ্রত্যাশিত। মনে রাখতে হবে সামাজিক মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বলা আর দায়িত্বশীল জায়গা থেকে তথ্য প্রদানকারীর মাঝে বিস্তর ফারাক রয়েছে। নেটিজেনের অস্থিরতা যদি তথ্যের প্রবাহ নিশ্চিতকারীকেও বিভ্রান্ত করে ফেলে এবং তিনি যখন সেই বিভ্রান্তি আরও অনেকের মাঝে ছড়িয়ে দেন তখন সাধারণ ব্যক্তির আর তাঁর তথ্য প্রদানের মাঝে কোনো পার্থক্য থাকে না।

দিনশেষে যার যতটুকু কাজ ততটুকু ঠিকঠাক করতে পারলে আমরা সকলেই হয়তো ঠিকঠাক চলতে পারতাম। কিন্তু আমাদের প্রবণতাই হলো আমরা নিজের কাজের চেয়ে অন্যের কাজ বুঝি বেশি। হ্যা, নিজের কাজ যথার্থভাবে করে অন্যের কাজের ভুল, ত্রুটি নিয়ে আলোচনা চলতেই পারে অথবা নিজের কাজ না করেও চলতে পারে তবে তাতে আত্মিক সন্তুষ্টির জায়গাটি মার খেয়ে যায়। ঘুরেফিরে আমরা শিক্ষিত, অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত সেই আত্মিক সন্তুষ্টির জায়গাকে মার খাইয়েই যাচ্ছি।

জগতের প্রত্যেক প্রাণী অন্যের ক্ষতি সাধণ না করে নিজের মতো জীবনযাপন করার পরিপূর্ণ সুযোগ পাক- এটিই প্রত্যাশা।

(দয়া করে অপ্রাসঙ্গিক কোনো বিষয় নিয়ে অযথা কোনো আলাপ জুড়তে আসবেন না কেউ- পড়তে পারেন, ইচ্ছে নাহলে উপেক্ষাও করতে পারেন)

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক : এডিসি, ক্যান্টনমেন্ট ও খিলক্ষেত, ডিএমপি।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন