প্রতিবন্ধীরা দেশের বোঝা নয় সম্পদ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রতিবন্ধীরা দেশের বোঝা নয়, বরং তারা আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সহকারী এবং দেশের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তাই কেউ যেন তাদের অবহেলার চোখে না দেখেন সেদিকে যত্নবান হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

শনিবার রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক ক্যাম্পাসে যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আয়োজিত জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা-২০১৯-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

পলক বলেন, আগে সমাজে প্রতিবন্ধীদের যে দৃষ্টিতে দেখা হতো এখন আর সেই সুযোগ নেই। যারা বিশেষভাবে সক্ষম তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আইসিটিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলতে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নেতৃত্বে বিগত ১০ বছরে এ দেশের মানুষ সচেতন হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে ‘প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করা হয়েছে।

নিজ নিজ মেধা ও সামর্থ্য দিয়ে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অবদান রেখে চলেছেন বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অনলাইন জব পোর্টাল করা হবে। তারা যেন অনলাইনে তথ্য আদান-প্রদান বিশেষ করে যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারেন এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে এবং নিতে পারেন।

যেখান থেকে যে কোনো স্থানের চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে চাকরিদাতার যোগাযোগ হবে। তিনি বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ৭টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রায় তিন হাজার প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রতিবন্ধীদের সক্ষমতার একটি ডাটাবেজ করা হবে। আগামী পাঁচ বছরে আইসিটি খাতে ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে, যার অন্তত ১ শতাংশ হবে প্রতিবন্ধী।

প্রতিযোগিতাটি যৌথভাবে আয়োজন করে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেবসহ আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তৃতা করেন।

এরপর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আইটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ১০০ প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে চারটি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে মোট ১২ জন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।

তারা হলেন- দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিভাগে বগুড়ার সহদেব কুমার, সিলেটের জয়দ্বীন রায় এবং বরিশালের জহিদুল ইসলাম; শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্যাটাগরিতে বরিশালের সাজ্জাদুল ইসলাম স্বাধীন, ইয়ামিন হোসেন আমিন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের সজীব আলী; বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিভাগে কুষ্টিয়ার নাজমুস সাইফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং ঢাকার ফারহান ইকবাল এবং নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী বিভাগে ঢাকার রিশতা গালিব, ফেনীর রাফিউল ইসলাম এবং ঢাকার আশিকুর রহমান।

এ ছাড়াও বিশেষ ক্যাটাগরিতে আরও দু’জন প্রতিযোগীকে পুরস্কৃত করা হয়।

২০১৬ সালে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে দিনব্যাপী এমন জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা প্রথম আয়োজিত হয়। এবারের প্রতিযোগিতা ছিল চতুর্থ আয়োজন।