পোস্ট অফিস থেকে ফোন, ‘আপনার চিঠি আসছে নিয়ে যাবেন’

যশোরের বেনাপোল সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার ও পিয়নদের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে সেবার মান নেই বললেই চলে। এই পোস্ট অফিসে যারা পোস্ট ব্যাংকিং কিংবা সঞ্চয় পত্রের মাধ্যমে অর্থ সঞ্চয় করছেন সে সকল গ্রাহকদের অনেকেই প্রয়োজনে অর্থ উত্তোলনের সময় নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

অনেক আমানতকারী অভিযোগ করেছেন, তারা জমাকৃত টাকা থেকে প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে গেলে পোস্ট অফিস থেকে বলা হচ্ছে যে আমাদের কাছে এখন টাকা নেই। টাকা হেড অফিস থেকে আসলে আমরা দিতে পারব। এভাবে আজ না কাল, কাল না পরশু চলতে থাকে গ্রাহকদের ঘোরাঘুরি ও হয়রানি। এ ছাড়াও প্রাপকের কাছে চিঠি বা মানি অর্ডারের টাকা পৌঁছানো দূরে থাক, চিঠি বা মানি অর্ডার এলে প্রাপককে ফোন করে পোস্ট অফিসে এসে নিয়ে যেতে বলা হয়।

জানা গেছে, বেনাপোল সাব পোস্ট অফিসে সঞ্চয় পত্রের মুনাফা ভোগীরা প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বয়স্করা পড়ছে বিপাকে। পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ তাদের মুনাফার টাকা না দিয়ে দিনের পর দিন বসিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে। তারা বলছে, ক্যাশে টাকা নেই। যশোর পোস্ট অফিস থেকে টাকা আসলে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু যশোর পোস্ট অফিস থেকে সঠিক সময়ে টাকা না আসার কারণে তাদের এই ভোগান্তি।

অনেক সঞ্চয় পত্রের মালিক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের এ সঞ্চয় পত্রের মুনাফার টাকার উপর সংসার চলে। মুনাফা দেওয়ার তারিখ শেষ হলেও পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখাচ্ছে।

বেনাপোল সাব পোস্ট অফিসে আমানতকারী আছমা খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি আমার জমাকৃত অর্থ থেকে কিছু উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করে এক সপ্তাহ যাবত ব্যর্থ হচ্ছি।

এদিকে বিভিন্ন প্রাপকের নামে বিভিন্ন এলাকা থেকে জরুরি চিঠিপত্র বা মানি অর্ডার আসলেও তা যথাসময়ে পৌঁছে দেওয়া হয় না। চিঠিপত্র বিলিকারক (পিয়ন) ইকরামুল হক কোন ব্যাক্তির নামে আসা চিঠি পত্র নিজে হাতে বিলি না করে ফোনের মাধ্যেমে পোস্ট অফিসে ডেকে এনে চিঠি পত্র বিলি করেন। আর যে সব চিঠি পত্র এভাবে ডেকে বিলি করা সম্ভব না হয় সেগুলো পোস্ট অফিসের ঝুঁড়িতে পড়ে থাকে।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে ইকরামুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লোকবল কম তাই বাধ্য হয়েই এভাবেই কাজ কর্ম চালাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বেনাপোল সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার শেখ জুলফিকার আলী জানান, আমাদের লোকবল কম, এখানে পেনশন, তিন মাস অন্তর, পরিবার ও বাংলাদেশ সঞ্চয় পত্র রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি। যার প্রতিদিন মুনাফা দিতে হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা। কিন্তু এখানে মুনাফা দেওয়ার ক্ষমতা আছে দুই লাখ টাকা। সে কারণে প্রতিদিন যশোর পোস্ট অফিসের প্রধান কার্যালয় থেকে টাকা নিয়ে এসে এসব মুনাফার টাকা দিতে হয়। তাছাড়া যশোর থেকে টাকা আনতেও সময় লেগে যায়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ