পুরো ম্যাচে ৯ সেভ, দুর্দান্ত-অবিশ্বাস্য কোর্তোয়া

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

আক্রমণাত্মক ফুটবলে সুযোগ এসেছিল বারবার। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার দারুণ সব সেভের সামনে ব্যর্থ হয়ে যায় লিভারপুলের সব চেষ্টা। উল্টো বিরতির পর গোল খেয়ে বসে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলেই ফের ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে শনিবার (২৮ মে) রাতে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপসেরার মুকুট জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি দ্বিতীয়ার্ধে করেছেন ব্রাজিল তারকা ভিনিসিয়ুস। এই প্রতিযোগিতায় আগে থেকেই রেকর্ড শিরোপা জয়ী দল রিয়াল মাদ্রিদ। আগের ১৬ বারের ফাইনালে ১৩বারই শিরোপা জিতেছিল তারা। নিজেদের ১৭তম ফাইনালে সেই সংখ্যাটাকে ১৪তে নিয়ে গেল স্প্যানিশ ক্লাবটি। গোটা ম্যাচে হয়ে দলের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে থাকলেন থিবো কোর্তোয়া। দুর্দান্ত সব সেভ করে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের জয়ের নায়ক এই বেলজিয়ান।

ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গোল করেন ভিনিসিউস জুনিয়র। খালি চোখে তরুণ এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে মনে হতে পারে জয়ের মূল কারিগর। কিন্তু ম্যাচ জুড়ে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে নায়ক আসলে ওই কোর্তোয়াই। পুরো ম্যাচে মোট ৯টি সেভ করেন রিয়ালের গোলবারে অতন্দ্র এই প্রহরী। ২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সবচেয়ে বেশি সেভ করার রেকর্ড এটি। শুধু সেভ করার সংখ্যা দিয়েই নয়, পুরো বক্সে তিনি আধিপত্য করেছেন। এতে দলের ডিফেন্ডারদের ওপর কমেছে চাপ, তারা রক্ষণ সামলেছেন কিছুটা নির্ভার হয়ে।

প্রথমার্ধেই রিয়াল গোল খেতে পারত অন্তত দুটি। সেটি হয়নি কোর্তোয়ার কারণেই। ষোড়শ মিনিটে ছয় গজ বক্সে জটলার মধ্যে থেকে মোহামেদ সালাহ ঠিকমতো শট নিতে না পারলেও বল ছিল লক্ষ্যে, শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে ফেরান কোর্তোয়া। পাঁচ মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে আরেক তারকা ফরোয়ার্ড সাদিও মানের জোরাল নিচু শটে বল যাচ্ছিল জালের দিকে। ঝাঁপিয়ে হাত ছুঁয়ে বলের পথ কিছুটা পরিবর্তন করে দেন কোর্তোয়া। বল বাধা পায় পোস্টে।

৬৪তম মিনিটে তো গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল লিভারপুল। কিন্তু এবারও তারা পারেনি কোর্তোয়ার দেয়াল ভাঙতে। ডি-বক্সের বাইরে ডান দিক থেকে বাঁ দিকে বল পায়ে কিছুটা আড়াআড়ি গিয়ে দূরের পোস্টে চমৎকার বাঁকানো শট নেন সালাহ, অসাধারণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর আবারও তিনি রিয়ালের ত্রাতা। একেবারে গোলমুখে সালাহর প্রচেষ্টা কোনোমতে পা দিয়ে আটকে দেন এবার। নির্ধারিত সময়ের আট মিনিট বাকি থাকতে লিভারপুলের আরেকটি প্রচেষ্টা ভেস্তে দিয়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন কোর্তোয়া। এবার সালাহর কোনাকুনি শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় পা বাড়িয়ে ঠেকান তিনি। খানিক পরই মাদ্রিদের দলটি মেতে ওঠে শিরোপা উৎসবে।

আগে একবারই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলেছিলেন কোর্তোয়া। তবে আতলেতিকো মাদ্রিদের জার্সিতে ২০১৪ সালে লিসবনের সেই ফাইনালে হারতে হয়েছিল রিয়ালের বিপক্ষেই। এবার রিয়ালের হয়ে প্রথমবার ইউরোপ সেরার ফাইনালে খেলতে নামার আগের দিন তিনি বলেছিলেন, প্যারিসে শিরোপা জিতে ভুলতে চান আট বছর আগের দুঃখ। সেটি তিনি পারলেন। বলা যায়, তিনিই দলকে জেতালেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে। ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এডউইন ফন ডার সারের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ‘ম্যান অব দা ম্যাচ’ হলেন কোনো গোলরক্ষক। এতেই ফুটে উঠেছে ম্যাচে কোর্তোয়ার দাপট।

 

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন